অনলাইন ডেস্কঃ সিলেটে জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলের কাছে বোমা বিস্ফোরণে ২ পুলিশসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বোমা বিস্ফোরণে এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনায় আহত কমপক্ষে ৩০ জন। তাদের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান মেডিক্যালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
বিস্ফোরণ স্থলের কাছেই কয়েক মিনিট আগে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার ফখরুল আহসান।সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মূসা বলেন, বোমা বিস্ফোরণে পরিদর্শক আবু ফয়সাল ও পরিদর্শক মনিরুল ইসলামসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন।
অন্যজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।তিনি বলেন, কে বা কারা এ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।জানা যায়, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়িতে জঙ্গি আস্তানার কাছেই দু’মোটরসাইকেল আরোহীর ঘটানো বিস্ফোরণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এর আগে শনিবার সাড়ে ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান জানান, সিলেট মহানগরের শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে জঙ্গিদের সঠিক সংখ্যা জানা নেই। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অপারেশন ‘টোয়াইলাইট’ চলছে।
এরই মধ্যে ভবনের ভেতরে জিম্মি থাকা ৭৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, ২৭ জন নারী ও ২১ শিশু।ফখরুল জানান, অভিযানের সময় ১০-১২ টি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ৫ তলা বিশিষ্ট আতিয়া ভবনে ৩০টি ফ্ল্যাটে ১৫০টি কক্ষ রয়েছে।
এসব কক্ষ, সিঁড়িঘর ও আনাচে কানাচে বিস্ফোরক ছড়ানো ছিটানো রয়েছে। জঙ্গিরা বিস্ফোরক দিয়ে কমান্ডোদের প্রবেশে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। এজন্য অপারেশনটি অনেক সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করতে হচ্ছে। এজন্য সময় লাগছে।শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেনের নেতৃত্বে ওই ভবনে অভিযান শুরু হয়।
এখন পর্যন্ত কেউ হতাহত হননি।বৃহস্পতিবার জঙ্গি সন্দেহে আতিয়া মহল ঘেরাও করার পর থেকে ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা আটকা পড়েন।পুলিশের ধারণা, ভেতরে নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাইনুল ওরফে মুসা রয়েছেন। ওই আস্তানায় অন্তত একজন নারী ও একজন পুরুষ জঙ্গি রয়েছেন।এ অভিযানে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যদের সহযোগিতা করছে পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াট, র্যাব, পিবিআই ও পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সিলেটে জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে অভিযান শুরু করে পুলিশ। মাইকে ভেতরে থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলে পুলিশ। তবে জঙ্গিরা সাড়া না দিয়ে উল্টো ভেতর থেকে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দের আওয়াজ পায় পুলিশ।এরপর জঙ্গি দমনের জন্য ঢাকা থেকে শুক্রবার সিলেটে হাজির হয় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াত টিম।আর শনিবার সকালে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো টিম।