হেলাল শেখ , ঢাকা ঃ
ঢাকার সাভার আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল ও নিম্নমানের খ্যাদ্যপণ্য অবাধে বিক্রি হচ্ছে- প্রশাসনের
নজর দেয়া জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন মহল। দেশের প্রায় প্রতিটি এলাকার মানুষ কর্মমুখী হয়ে আসেন
সাভার আশুলিয়ায়। সাধারণ মানুষের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। এদের মধ্যে কেউ আবার ভিআইপি। আর নি¤œ
আয়ের মানুষগুলোর থাকা খাওয়ার আরও বেশি সমস্যা, এ যেন দেখার কেউ নেই। “তারা সবাইতো বসবাস করেন
স্বাধীন বাংলাদেশে” তাদের কোনো স্বাধীনতা নেই বলে অনেকেই জানান। কেউ কারো খবর রাখে না। “
সারাদেশে ভেজাল ও নি¤œমানের খাবার খেয়ে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মিষ্টির দোকান, বিস্কুট, কেক, চানাচুর রুটিসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি হচ্ছে যে
সকল বেকারিগুলোতে এবং হোটেলে- নুংড়া পরিবেশে এসব খাবার তৈরি করে বিক্রি করছে কিছু অসাধু
ব্যবসায়ীরা। মহিষের মাংস গরু বলে চালানো হচ্ছে। ভেড়া, ছাগলের মাংস খাসির বলে চালিয়ে দিচ্ছে কসাইরা।
মাংসের দামও কমাচ্ছেন না কেউ। অথচ প্রতারণা করা হচ্ছে ক্রেতার সাথে। হাট-বাজার, মার্কেটে নি¤œমানের
পণ্য বিক্রি হচ্ছে যেখানে-সেখানে। ভেজাল খাদ্য খেয়ে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলেও এ যেন দেখার
কেউ নেই। বেকারীতে পঁচা ডিম দিয়ে কেক তৈরি হচ্ছে। পঁচা আটা দিয়ে রুটি তৈরি হচ্ছে। নিষিদ্ধ
মেডিসিন ব্যবহার করে হোটেল ও মিষ্টির দোকানে খাবার তৈরি করছে, সেই খাবার বিক্রি করে লাখ লাখ টাকার
মালিক বনে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দেখা যায়, মশা, মাছি ও পোঁকা মাকড় পড়ে থাকে অনেক মিষ্টির সুরার মধ্যে।
পঁচা মিষ্টি দিয়ে নতুন করে আবার মিষ্টি তৈরি করা হয় বলে সুত্র জানায়। সেই মিষ্টি বিক্রি করছে কম দামে।
দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল খাবার ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।
রাজধানীর নিকটবর্তী শিল্পাঞ্চল সাভার, আশুলিয়া, ধামরাইসহ বিভিন্ন এলাকায় নানারকম ভাবে নাগরিক
সমস্যা দেখা দিয়েছে। শিল্পাঞ্চলে বসবাস করেন বেশিরভাগ নি¤œ আয়ের মানুষ। তারা কারখানায় সারাদিন
জেলখানার মতো বন্দী থেকে কাজ করে রাতে বাসায় ফিরে দেখেন চুলার গ্যাস নেই,রান্না হবে না। রাত ১২টার পর
যদিও গ্যাস আসে, আবার ভোর না হতেই চলে যায়। বেতনও বেশি নয়, মাত্র ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা। বাসা ভাড়া ২
থেকে ৪ হাজার টাকা। দোকান বাকি, গ্রামে পরিবারের সদস্য মা বাবা,কারো সন্তানের জন্য টাকা পাঠাতে
হয়। অনেক সময় ওষুধ খাওয়ার টাকাও থাকে না তাদের কাছে। আর যদিও ওষুধের দোকানে বাকিতে ওষুধ নিয়ে
থাকেন, সেখানেও ভেজাল ও নি¤œমানের ওষুধ।এরকম অনেক সমস্যা সাধারণ নাগরিকদের। গাড়ির স্টাফ-চালক বা
হেলপার গাড়ির জমা দিতে পারেন না, রোডে গাড়িও অনেক বেশি হয়েছে, দিন দিন অবৈধ যানবাহন বৃদ্ধি
হচ্ছে বলে তারা জানান। গাড়ির স্টাফরা বেশিরভাগ সময় হোটেলে খাবার খেয়ে থাকেন। আর হোটেলের খাবার
খেয়ে কি জীবন চলে? বেশিরভাগ মানুষ বলছেন, প্রায় সব খাবারই ভেজাল, যে কোনো পণ্য নকল ও নি¤œমানের
হওয়ায় মানুষের রোগবালাই বাড়ছে। সাভারের প্রশাসন কর্মকর্তা বিকাশ বিশ্বাস বলেন, আপনারা তথ্য দিন,
আমরা পুলিশ নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
উক্ত ব্যাপারে সাভারের রাজু, সাইফুল বলেন, নাগরিক সমস্যা অনেক রকম, তবে ভেজাল ও নি¤œমানের খাবার সব
এলাকায়ই বিক্রি হচ্ছে। আশুলিয়ার ইমন, জুয়েল ও জাফর বলেন, ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হলে
কিছুটা হলেও মানুষ ওই সব অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রিহাই পাবে। ধামরাইয়ের আসরাফুল, রুবেল, কবির,
হাসান ও উজ্জল বলেন, ভেজাল ও নি¤œমানের খাবার যেখানে-সেখানে বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসন যদি ভেজাল বিরোধী
অভিযান পরিচালনা করেন, তাহলে ভেজাল খাবার তৈরি করা অনেকটা কমে যাবে। বেশ কয়েকজন প্রশাসন
কর্মকর্তা জানান, সারাদেশে ভেজাল বিরোধী অভিযান চলছে, কিন্তু থানায় গাড়ি কম থাকায় এবং জনবল তেমন
বেশি না থাকার কারণে সবদিন অভিযানে যাওয়া সম্ভব হয় না। তবে ভেজাল বিরোধী অভিযানে আপনাদের সকলের
সহযোগিতা দরকার। স্বাথ্য কর্মকর্তাগণ বলছেন, যে সকল খাবার ভেজাল ও নি¤œমানের ভাবে তৈরি করা হয়,
সেসব খাবার বিষ হয়ে মানব দেহে অনেক সমস্যা ও রোগ বাসা বাঁধে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।