পারভেজ ,কলাপাড়া প্রতিনিধি : কলাপাড়া পৌরশহরের বাদুরতলীতে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়িসহ তাদের জমিজমা দখল করে একটি প্রভাবশালী মহলের ঘরবাড়ি তোলার চেষ্টার অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ১৫ হিন্দু পরিবারের অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুরা প্রেসক্লাবের সামনে আধাঘন্টা অবস্থান করেন। সোমবার সকালে এসব পরিবার অবস্থান নেয়। তারা এ ঘটনায় কলাপাড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কলাপাড়া থানা পুলিশ প্রতিপক্ষের স্থাপনা তোলার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে কাজ বন্ধ থাকলেও ফের তাদের দাবিকৃত জমি দখলের শঙ্কা করছেন তারা। নিমাই সাহা ও মনোরঞ্জন শীলের যৌথভাবে থানায় দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে সোমবার সকাল আটটার দিয়ে তাদের দখলীয় বাদুরতলী মৌজার ৩৩৯ নম্বর খতিয়ানের ৮১৪ নম্বর দাগের জমিতে প্রতিপক্ষ বাদুরতলী এলাকার বাসীন্দা আঃ হক মুসল্লী, তার স্ত্রী হাসিনা বেগম, দেলোয়ার হোসেন খান, পৌরসভার কর্মচারী আঃ রবসহ ৬জনে প্রবেশ করে ঘর তোলার কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ১৫টি পরিবারের নারী-পুরুষ-শিশুসহ সকল সদস্যরা প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের আশ^াসে বাড়িতে ফিরে যায়। মনোরঞ্জন শীল, নিমাই সাহা-সন্ধ্যা রাণী, শঙ্কর চক্রবর্তী- সুচিত্রা দেবী, জয়দেব চন্দ্র শুকুল-স্বরস্বতি, সুধাংসু শুকুল-সীতা রাণী, স্বপন চন্দ্র শুকুল-স্বর্ণারাণী, সুনীল চন্দ্র শুকুল-গীতারাণী দম্পতিসহ সকলের দাবি তারা ওই দাগের সরকারি খাস জমি ২০১২ সালে বন্দোবস্ত পেয়ে ১৫টি পরিবার ভাগাভাগি করে বসবাস করে আসছেন। যেখানে একটি মন্দিরও রয়েছে। দুইটি বন্দোবস্ত কেসমূলে তারা এ জমির মালিক। যা দখল করতে প্রতিপক্ষ চক্রটি মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছে। অভিযুক্তদের দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা জানান, একই দাগের জমি তারাও ভূমিহীন হিসেবে বন্দোবস্ত পেয়ে ভোগদখল করে আসছেন। এ জমি সরকারি সার্ভেয়ার দ্বারা মাপ করিয়েছেন। হিন্দুদের কোন জমি দখল করা হয়নি। শুধুমাত্র হয়রাণি করার জন্য এমন মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে। কলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহনেওয়াজ জানান, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধীয় জমিতে স্থাপনা তোলার কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নয় নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আল-আমিন সরদার জানান, ৮১৪ নম্বর দাগের তিন একর জমি থেকে হিন্দু পরিবারকে ৫০ শতক জমি বন্দোবস্ত দেয় সরকার। তাদের প্রায় দশ শতক জমি দখল করে নেয়া হয়েছে। এসব পরিবার ৩০-৩৫ বছর ওই জমিতে বসবাস করে আসছে। ওই দাগের ওপর প্রতিপক্ষরাও একটি বন্দোবস্ত পায়। যা কলাপাড়া উপজেলা ভূমি বন্দোবস্ত কমিটি বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। তিনিও সংখ্যালঘু পরিবারের জমিজমা রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জোরপুর্বক তাদের জমি দখল চেষ্টার প্রতিবাদ করেছেন।