ঢাকা : তিন দিন পেরিয়ে গেলেও গুলশানের রেস্তোরাঁয় জিম্মি উদ্ধার অভিযানে নিহত ছয় জঙ্গির লাশ কেউ নিতে আসেননি।
মঙ্গলবার ছয় জঙ্গির লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তাঁদের লাশ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, নিহত ছয় জঙ্গির লাশ সিএমএইচে আছে। সেখানে আজ তাঁদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। লাশ নিতে হলে তা পুলিশের মাধ্যমে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব প্রক্রিয়া আছে, তা নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ গণমাধ্যমকে জানান, ছয় জঙ্গির মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে গুলি ও বোমার আঘাতে। বাকি চারজন মারা গেছে গুলিতে।
মঙ্গলবার নিহত কয়েকজন জঙ্গির পরিবারের সদস্যরা বলেন, তাঁদের পরিবারের সন্তানদের ঘটনায় তাঁরা লজ্জিত, মর্মাহত। এমন ঘটনা তারা ঘটাতে পারে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাঁরা বলেন, বাসার সবাই ভেঙে পড়েছে। এ কারণে কেউ লাশ আনতে যাননি। এক জঙ্গির বাবা বলেন, ‘যেতে নিশ্চয়ই হবে। কেননা আমি তো বাবা। এটা তো আর অস্বীকার করতে পারব না।’
গত শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকে হত্যাযজ্ঞ চালায় জঙ্গিরা। ১৭ জন বিদেশি, ৩ জন বাংলাদেশিসহ ২০ জনের মৃত্যু হয়। জিম্মি উদ্ধার অভিযানে নিহত হন আরও ছয়জন। এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম দফা উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।
আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস নিহত পাঁচজনকে তাদের সদস্য বলে দাবি করলেও বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি, দেশে বেড়ে ওঠা।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এখন তাঁরা মনে করছেন, আইএসের কথিত বার্তা সংস্থা আমাক নিউজের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স যে পাঁচজনের ছবি দিয়েছে, তাঁরাই মূলত হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা সবাই অভিযানে নিহত হন। এই পাঁচজনের মধ্যে বগুড়ার খায়রুলকে ছয়-সাত মাস ধরে পুলিশ খুঁজছিল। বাকিদের সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তাঁদের।