আল মামুন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি :
শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী আছে নিয়মিত হচ্ছে পাঠদান ছাত্রছাত্রীর উপবৃত্তির ব্যবস্থাও রয়েছে, বছরের শুরুতেই যথাসময়ে শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নতুন বই, নেই শুধু শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ভাতা। বেতন বিহীন মানবেতর জীবন-যাপন করছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ৬ টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১ টি কলেজ ও ২ টি দাখিল মাদ্রাসার ১৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারীরা। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিজ দ্বায়িত্ব পালন করে গেলেও এসব শিক্ষকরা
পাচ্ছেনা সরকারের ডিজিটাল সুবাতাসের ছোঁয়া।
উড়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজুয়ানুল করিম বলেন ১৯৯৪ সালে এলাকার বিত্তবান আদিবাসী রজনী কান্ত সাহা শিক্ষার আলো ছড়াতে ৬ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেছিল। তাঁরই ছোট ভাই দীর্ঘ দিন প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্ব পালন করলেও বেতনের টাকা না গুনেই তিঁনি মারা গেলেন। তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই আমিসহ অন্য শিক্ষকরা নিয়মিত ছাত্রছাত্রীদের ভাল ফলাফলের জন্য পাঠদান করে আসছি কিন্তু আজ অবধি পেলামনা বিলবেতন। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন আমাদের অনেক পরেও বিদ্যালয় তৈরী করে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিল বেতন সবই হয়েছে। অথচ আমরা বছরের পর বছর নিয়মিত ছাত্র পড়িয়ে এখনও কোন বেতন ভাতা পেলামনা। তিঁনি আরো অভিযোগ করে বলেন সরকারি চাকরির বয়সানুযায়ী এ স্কুলের অর্ধেক শিক্ষককে বাঁকী ৬-৭ বছরের মধ্যে এমপিও না হলে বেতনের স্বাধ গ্রহন করা ছাড়ায় অবসরে যেতে হবে।
কোকতাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষিকা রোখসানা পারভীন বলেন ২০ বছর যাবত ৭ কিমি রাস্তা ৩ বার ভ্যান-রিক্সসা পাল্টিয়ে আমাকে স্কুলে আসতে প্রতিদিন ৬০-৭০ টাকা খরচ হয় এভাবে আর কত দিন চলব। পারছিনা ঠিকমত সংসার গোছাতে, অর্থের অভাবে না পারছি ছেলে-মেয়েদের ভাল কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে। এমন অভিযোগ, হতাসা আর না পাওয়ার বেদনার কথা বলেন মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৬ টি কলেজ, ৪৬ টি মাধ্যমিক স্কুল ও ৩১ টি দাখিল মাদ্রাসার মধ্যে এখন পর্যন্ত এমপিও ভুক্ত হয়নি রতনপুর কলেজ, বড়মানিক ও আঁটুল দাখিল মাদ্রাসা এবং কোকতাড়া আদর্শ, উড়ানী, কড়িয়া বালিকা, পাঁচবিবি পৌর বালিকা, মঠপাড়া ও কাঁশপুর উচ্চ বিদ্যালয়।
উপজেলা নন এমপিও শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন কয়েক বছর থেকেই আমরা সারা দেশের নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এমপিওর জন্য ঢাকায় আন্দোলন কর্মসুচী পালন করে আসছি। ঢাকায় আন্দোলন করতে গিয়ে আমার মত শত শত শিক্ষক পুলিশের লাঠির আঘাত পেয়েছি, গরম পানি ও মরিচের গুড়ার ঝাল সহ্য করতে হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তারা শুধু আশার বানী শুনিয়ে ঢাকা থেকে নিজ কর্মস্থলে পাঠিয়ে দেন কিন্তু আজ পর্যন্ত পেলামনা বিলবেতন জীবন এভাবে আর কতদিন চলতে পারে।