হেলাল শেখঃ
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই দেশের মানুষ আমরা বাংলাদেশী বলতে পারি। আলো
যেমন তেমন হোক অন্ধকারে জীবনের যাবতীয় গ্লানি ভুলে গিয়ে সবার মাঝে আসে
বাংলা নববর্ষ নতুন রূপে, নতুন ভাবে, নতুন মায়া মমতায় এই দিনটি পালন করে জাতি।
হিন্দু সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা বার মাস অনেককাল আগে থেকেই পালিত হতো।
এই সৌর পঞ্জিকার শুরু হতো গ্রেগরী য় পঞ্জিকায় এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে।
হিন্দু সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম, বঙ্গ, কেরল, মনিপুর, নেপাল, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব,
তামিল নাড়–, এবং ত্রিপুরার সাংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অনেক আগে
থেকেই পালিত হত।“ এখন যেমনঃ নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি
সর্বজনীত উৎসবে পরিণত হয়েছে, একসময় এমনটি ছিলো না। ভারতবর্ষে মুঘল
স¤্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর স¤্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যেও খাজনা আদায়
করত। কিন্তু হিজরী সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না।
এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হত। বৈশাখ মানে ইলিশ
পান্তা খাওয়া নয়। যাদের লবন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায়, তারা ইলিশ মাছ পাবে কোথায়?
যে ব্যক্তির ডাকে দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান করা
প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। বলুন, বাংলার মানুষ মুক্তি চায়। কার ভাষন ছিলো?
আমি তার কিছু তথ্য আপনাদের জানানোর চেষ্টা করছি বৈশাখের এই দিনটিতে। সবাই
বলো, জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো। বিশেষ করে ১৭ মার্চ, ১৯২০ সালে গোপালগঞ্জ
জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের শেখ লুৎফর রহমান ও মোসাম্মৎ সাহারা খাতুন এর ঘরে
জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল হতে
১৯৪২ সাল পর্যন্ত পড়া লেখা করেন। এর পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে
তিনি (বি এ) পাস করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি আইন অধ্যয়নের জন্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু আন্দোলনরত কর্মচারীদের সাথে একাত্মতা
ঘোষণা করায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয় এবং ছাত্র জীবনে ইতি ঘটে
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। রাজনীতি ঃ স্কুল ছাত্র থাকাকালীন তিনি
রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীও নৈকট্য লাভ করেন। ১৯৪৯
সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি কারাবরণ করেন। ১৯৫২ সালে কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন এবং
মাওলানা ভাষানীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগদান করেন। ১৯৫৩ সালে
আওয়ামী মুসলিম লীগের জেনারেল সেক্রেটারী পদে নির্বাচিত হন এবং যুক্তফ্রন্টের
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়ন লাভ করেন তিনি।“ ১৯৭২ সালে ৮ জানুয়ারি
পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তন এবং
প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ। ভারত-বাংলাদেশের ২৫ বছর মেয়াদী চুক্তি সম্পন্ন।
এর পর ১৯৭২ সালে ১২ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন।
আমরা ইতিহাস জানি না অনেকেই। পহেলা বৈশাখ পালন করছেন সবাই কিন্তু বাংলা ভাষা
ও বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে কমপিউটার বিসিএস প্রিলিমিনারী গাইড পড়–ন।
আমরা এমনিতো মাছে ভাতে বাঙালী, আবার বলছি, পহেলা বৈশাখ ইলিশ পান্তা খাওয়া
জরুরি নয়। সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করুন।