বাংলার প্রতিদিন ডটকম, ঢাকাঃ
জনপ্রিয় সুরকার, শিল্পী ও সংগীত পরিচালক লাকী আখন্দকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তাঁকে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার দেয়।
আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে লাকী আখন্দের মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলা মাঠে লাকী আখন্দের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও লাকী আখন্দের আত্মীয় এরশাদুল হক টিংকু জানান, গার্ড অব অনার শেষে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শিল্পীর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষ মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন আশির দশকের এই শিল্পী। রাতে তাঁর মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় নিজের বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন লাকী আখন্দ। দ্রুত তাঁকে বাসার পাশের মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর লাকী আখন্দের ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর তাঁকে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। থাইল্যান্ডের পায়থাই হাসপাতালে তাঁর যকৃতে অস্ত্রোপচারও করা হয়। এরপর দেশে এসে কিছুদিন থাকার পর একই বছরের নভেম্বরে আবারও ব্যাংককে গিয়ে শরীরে ছয়টি কেমো নিতে হয়েছিল তাঁকে। কেমো শেষ করে ২০১৬ সালের ২৬ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি।
গত বছরেও ঢাকার তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন লাকী আখন্দ। তাঁর শরীরে মোট নয়টি কেমো দেওয়া হয়েছিল। কেমো দেওয়া শেষ হলে চিকিৎসকরা তাঁকে বাসায় কিংবা পাহাড়ে গিয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা লাকী আখন্দ। তাঁর গাওয়া ও সুরের উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো ‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘আগে যদি জানতাম’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’, ‘মা-মনিয়া’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘কি করে বললে তুমি’ ইত্যাদি।