অনলাইন ডেস্কঃ
আফগানিস্তানের বালখ প্রদেশের মাজার-ই-শরিফের সেনা ঘাঁটির পাশের মসজিদে তালেবানের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সেনা সদস্যের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ১৫০-এ দাঁড়িয়েছে। আরও অনেকে আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শুক্রবার ওই মসজিদে সেনারা নামাজ পড়ার সময় ওই ঘটনা ঘটে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা। স্থানীয় কর্মকর্তারাও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বলা হচ্ছে, এটি আফগান সামরিক ঘাঁটির ওপর এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা। নিহতের আনুষ্ঠানিক সংখ্যা সরকারের পক্ষ থেকে আরও পরে জানানো হবে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন আফগান সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
দেশটির সেনা মুখপাত্র নাসরাতুল্লাহ জামশিদি বলেন, বালখ প্রদেশের রাজধানী মাজার-ই-শরিফের ভিতরে মসজিদে এবং ঘাঁটির ভেতর খাবার ঘরে এই হামলা চালানো হয়। তখন মসজিদে সেনা সদস্যরা নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন। অন্যদিকে খাবার ঘরে আরও বহু সেনা সদস্য খাচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর দু’টি গাড়িতে হামলাকারী দশজনের মতো ব্যক্তি সেনাবাহিনীর চেকপয়েন্ট পার হয়েই ঘাঁটিতে ঢোকে। ঢোকার আগে ঘাঁটির গেটে হামরাকারীরা দারোয়ানকে বলেছিল, তারা আহত সৈন্য নিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত তাদের প্রবেশ করতে হবে। তাদের সবার পরনে সেনাবাহিনীর পোশাক ছিল।
হামলাকারীরা রকেটচালিত গ্রেনেড এবং রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ হামলার দায় স্বীকার করেছেন।
আরেক সেনা কমান্ডার বার্তা সংস্থা এএফপি’কে জানান, সেনা ঘাঁটি থেকে শুক্রবার অনেক রাত পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। অন্তত একজন হামলাকারী আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, কয়েকজন জার্মান সেনা ও অন্যান্য দেশেরসহ প্রায় ৭০ জন সেনা সদস্য রয়েছেন মাজার-ই-শরীফের ওই সেনা ঘাঁটিতে, যারা ন্যাটোর সদস্য হিসেবে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন।
সেনা ঘাঁটির মসজিদে হওয়া হামলাটি একটি ‘গুরুতর’ হামলা বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জন টমাস। রয়টার্সকে তিনি জানান, হামলাটি মসজিদ এবং ঘাঁটির খাবার ঘর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল।
আমেরিকান কর্মকর্তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জার্মান অপারেশন কমান্ডের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের জানামতে কোনো জার্মান সেনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এবং ন্যাটো বাহিনীর অন্য কোনো সৈন্যেরও ক্ষতি হয়নি।
গত মাসেও কাবুলের একটি সামরিক হাসপাতালে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের কয়েক সদস্যের হামলায় ৫০ জনের মতো নিহত হয়। জঙ্গিরা সেখানে বন্দুক, গ্রেনেড এবং ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল।