রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত হিজবুত তাহরীরের ২ সদস্য গ্রেপ্তার বগুড়ায় আইন কর্মকর্তা নিয়োগ বিএনপি-জামায়াতপন্থি ১০৭ জন অতি বৃষ্টির কারণে লালমনিহাট জেলায় বন্যা নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত বগুড়ায় ট্রাক পরিবহনের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার আত্মসাৎ ও মামলা টিএমএসএস সদস্যদের (RAISE) প্রকল্পের উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দীর্ঘ ১৩ বছর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চাকুরী ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আশুলিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিত্যক্ত চুল পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে ভাগ্য বোনার চেষ্টা আদিতমারীর নারীদের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর হলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম

পীরগঞ্জে সহায়ক বই কিনতে বাধ্য করছে শিক্ষকরা, শিক্ষার্থীরা অসহায়

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭
  • ২৪৮ বার পড়া হয়েছে

 

জাকির হোসেন,পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) থেকে : ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায়

শিক্ষার্থীদের সহায়ক বই কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের

অভিযোগ, শিক্ষক সমিতির সরবাহ করা সহায়ক বইয়ের তালিকা অনুযায়ী নির্দিষ্ট

লাইব্রেরী থেকে বই কিনতে বলছেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আর নির্দিষ্ট লাইব্রেরী

থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক বই কিনতে গিয়ে চড়া দামে বই কিনতে হচ্ছে বলে

জানান তারা। আর বই না কিনলে শ্রেণীকক্ষে সহায়ক বই থেকে প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের

হেনস্তা করছেন শিক্ষকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, সমানে তার

জেএসসি পরীক্ষা। তাই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে সহায়ক বইগুলো কিনতে স্কুল থেকে বলা

হয়েছে । আর এতে পরীক্ষায় নাকি কমন পাওয়ার কথা জানিয়েছে তাঁর শ্রেণী শিক্ষক।

এজন্যই বইগুলো কিনতে হচ্ছে।

আরেক শিক্ষার্থী বলে, সহায়ক বই তো কিনতেই হবে। কারণ ক্লাসে তো স্যাররা ঐসব

বই থেকে পড়া দিচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, সহায়ক বইয়ের

নামে শিক্ষার্থীদের গাইড কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। এসব সহায়ক বই আদৌ কোন

প্রয়োজন আছে কি না, জানা নেই তার। আরেক অভিভাবক বলেন, ‘সরকার ফ্রি বই দেওয়ার

পরেও যদি হাজার টাকায় আমাদের সহায়ক বই কিনতে হয় তাহলে সরকারের ঐসব ফ্রি

বইয়ের দরকার কি। ফ্রি বই তো বুঝি শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন না।এজন্য আমাদের বাচ্চাদের

সহায়ক বই কিনতে বাধ্য করাচ্ছেন।’ ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়–য়া ছেলের একসেট বই কিনতে

হাজারের উপরে টাকা লাগছে জানিয়ে এক অভিভাবক বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ছেলেকে

কিনতে বলেছে, তাই কিনে দিতে বাধ্য হয়েছি। কৃষি কাজের সাথে জড়িত এক

অভিভাবক বলেন,‘সহায়ক বইগুলোর যে চড়া দাম। ২বস্তা ধান বিক্রি করেও ছেলের ১ সেট বই

হয় না।আমরা মতো কৃষকরা ছেলে-মেয়ের বই কিনতে বড়ই চাপে আছে।সরকার তো

এইগুলো দেখবে না।’ আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সহায়ক বইগুলো তাদের কাছে

এক ধরনের বোঝা। বোর্ড বইয়ের পাশাপাশি সেগুলো পড়তে অতিরিক্ত চাপ হচ্ছে। কিন্তু

কোন কিছু করার নেই, স্কুলের স্যারেরা কিনতে বলেছে। প্রশ্নপত্র নাকি এই বইগুলো

থেকেই হবে। অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক চলতি বছরের শুরুর দিকে বই কিনতে ব্যর্থ হলে

স্কুলে তাদের ছেলে মেয়েদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের

সাথে কথা বলে জানা গেছে।

তবে শিক্ষকরা এ অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য,শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্যই তারা চাপ

নয়, সৎ পরামর্শ দেন। পুস্তক তালিকার নাম অনুযায়ী লাইব্রেরি গুলোতে সরেজমিন খোঁজ

নিয়ে জানা যায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক সেট সহায়ক বই কিনতে অভিভাবকদের ১ হাজার ৩৩০

টাকা, ৭ম শ্রেণির ১ হাজার ৪৮০ টাকা, ৮ম শ্রেণির ১ হাজার ১৬৮০ টাকা, ৯ম শ্রেণির

বিজ্ঞান শাখার ৩ হাজার ও মানবিক শাখার ২ হাজার ৫শ’ টাকা লাগছে। এদিকে বই

কিনতে গিয়ে আরেক বিড়ম্বনায় পড়ছেন অভিভাবকরা। প্রতি শ্রেণির সেট ছাড়া

পৃথকভাবে (একক বই) কোন বই বিক্রি করছেন না বিক্রেতারা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়,

এ উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৮২টি আর এগুলোর ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত

শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। সহায়ক বই (গাইড বই) এর তালিকা উপজেলার

মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে সরবরাহ করার কথা স্বীকার করে শিক্ষক সমিতি’র সভাপতি

মোহাম্মদ আলম জানান, ‘আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, শিক্ষার্থীরা বোর্ড বইয়ের

পাশাপাশি সহায়ক বইয়ের সহযোগিতা নিলে ফলাফল ভালো করবে। এজন্যই প্রত্যেক

বিদ্যালয়ে তালিকা দেয়া হয়েছে। তবে এসব বই শিক্ষার্থীদের কিনতে বাধ্য করার কথা

তিনি অস্বীকার করেন। লাইব্রেরির মালিক সমিতির সভাপতি চিত্র রায় বলেন, নোট ও

গাইড বইগুলো আমরা ছাপি না। রাজধানী ঢাকাসহ সব জায়গায় খোলামেলাভাবে এগুলো

বিক্রি হয়, আমরাও বিক্রি করে থাকি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল্লাহ বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন

এসেছি। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে ইংরেজি

গ্রামার ও বাংলা ব্যাকরণ বই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে। আলাদাভাবে গাইড বই কেনার

প্রয়োজন নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, খোঁজ নিয়ে

সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451