সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:
সুনামগঞ্জের শনির হাওরের পর এবার সোমবার সকালে ঢলের পানি ডুকে পাশর্^বর্তী
জামালগঞ্জের পাকনার হাওরের সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমির আধা পাকা বোরো ধান
পানিতে তলিয়ে গেছে। পাকনার হাওরে জামালগঞ্জের কৃষক ছাড়াও পাশর্^বর্তী দিরাই ও
নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক চলতি মৌসুমে বোরো ধান
আবাদ করেছিলেন।’ ওই হাওরের ফসল ডুবিতে দু’ঘন্টার বাঁধ দিয়ে পানি ডুকে
১০২ কোটি ৬০ লাখ টাকার বোরো ধান নষ্ট হল।
স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, উপজেলার পাকনার হাওরের উড়ারবন বেরীবাঁধ দিয়ে মাত্র
সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার মাত্র দু’ঘন্টায় তীব্র বেগে ঢলের পানি ডুকে পুরো হাওরের
আবাদকৃত বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। জেলার সব কটি বোরো ফসলী হাওর
ডুবির পর পাকনার হাওরটি রবিবার রাত অবধি টিকে ছিল ঢলের পানির আগ্রাসন
থেকে। এ হাওরে জামালগঞ্জসহ জেলার দিরাই ও পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনার খালিয়াজুরি
উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক চলতি মৌসুমে বোরো ধান আবাদ করেছিলেন।’
জানা গেছে, এ হাওরেও পানি উন্নয়ন বোর্ড , ঠিকাদার ও পিআইসির লোকজন
বাধের বরাদ্দকৃত টাকার অধিকাংশ উওক্তোলন করলেও সময়মত বেরীবাঁধের নির্মাণ কাজ
শেষ না করায় হাওর তীরের ৩৫ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক বাঁধ মাসখানেক ধরেই
বাঁশ খুঁটি ও মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধ ঠিকিয়ে রাখার সর্বশেষ চেষ্টা চালিয়ে
গেছেন। রবিবার ভোর থেকে পাকনার হাওরের এ বাঁধরক্ষার কাজে ১৭৪ জন শ্রমিক ও
নজরদারি রাখার জন্য ৫০ জন পাহারাদার নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলই না।
জামালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলার কৃষি অফিসার ড. সাফায়াত
সিদ্দিকী সোমবার দুপুরে এ প্রতিবেদকে জানান, পাকনার হাওরের সাড়ে ৯ হাজার
হেক্টর জমিতে উৎপাদিত ধান থেকে প্রায় ৩৪ হাজার ২’শ মেট্রিক ধান উৎপাদনের
লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল কিন্তু ফসল ডুবির কারনে ১০২ কোটি ৬০ লাখ টাকার
পরিমাণ বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেল।’
সিলেট বিভাগ গণদাবী পরিষদের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সদস সচিব হাবিব সরোয়ার
আজাদ বলেন,সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমির ধান সহ সোমবার যেমন জামালগঞ্জের পাকনার
হাওরের ডুবেছে ঠিক একই ভাবে এরআগের দিন অর্থাৎ রবিবার পানিতে তলিয়ে গেল
তাহিরপুরের শনির হাওর । বাপ-দাদার মুখে শুনেছি অতীতে এক সময় নাকী শনির হাওরের
ধান দিয়েই সারা দেশের মানুষের সাত দিনের খাবারের ধান হত, অতচ হাওর তীরের
লোকজনের আজ এ দুর্দিনে নিজেদের ঘরেই নিজেদের খাবারের ধানই নেই গত দুদিন
ধওে শনি ও পাকনার হাওরতীরের অধিকাংশ কৃষকদেও ঘরে রান্নাও হয়নি।’’
জাামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম তালুকদার ঝুনু মিয়া সোমবার
বলেন, এমন ডাকাতি জীবনে কোনদিন দেখিনি, বাঁধের বরাদ্দের টাকা বাঁধের কাজ
শুরুর আগেই পাউবো, ঠিকাদার ও পিআইসির লোকজন উঠিয়ে নিয়ে গেলেন অতচ
বাঁেধ এসে কোনদিন তারা উকিও দেয়নি , কৃষককের সারা বছরের একমাত্র অবলম্বন
বোরো ধান তলিয়ে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে ওদেরকে হাওর দানব কিংবা হাওর খেকো
ডাকাত হিসাবে ধীক্কার জানানোর ছাড়া আর কী ই বা করার আছে।