গ্রামবাসীরই নির্মাণ করলো বাঁশের সাকোঁ কার্যাদেশের সময়সীমা শেষ হলেও নির্মাণ কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার
প্লাবন গুপ্ত শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পুরাতন সেতু ভেঙ্গে নতুন সেতুর নির্মাণ না হওয়ায় দশ
গ্রামবাসীর চলাচলের পথটি পানির নিচে তলিয়ে চলাচল বন্ধ হওয়ায় বাধ্য হয়ে
গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেছেন বাঁশের সাঁকো।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টায় উপজেলার ৫নং খয়েরবাড়ি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর বাজার
সংলগ্ন লক্ষ্মীপুর-মহদিপুর গ্রামীণ রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, মহদিপুর, মহেশপুর,
বারাইপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের লোকজন বাঁশ, লাঠিখুঁটি নিয়ে বাঁশের সেতু
নির্মাণ কাজ করছেন। নির্মাণকারি গ্রামবাসী জানান সন্ধ্যার আগেই বাঁশের
সাঁকো নির্মাণ কাজ শেষ হলে সাঁকোর ওপর দিয়ে দশ গ্রামের মানুষ পূর্বের মতোই
চলাচল করতে পারবেন।
জানা যায়, ওই স্থানে পূর্বে একটি ইটের পুরাতন সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ
হওয়ায় সেটি ভেঙ্গে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের
আওতায় ৩২লাখ টাকা ব্যায়ে একটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়। ছয় মাস
আগে সেতু নির্মাণের টেন্ডার হওয়ার পরপরই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পুরাতন সেতুটি
ভেঙ্গে চলে গেলেও এখন পর্যন্ত সেতু নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেননি। পুরাতন
সেতুটি ভেঙ্গে ফেলাসহ নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়া এবং বিকল্প কোন রাস্তা না
থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই সেতু দিয়ে চলাচলকারি দশ গ্রামের মানুষজন। বিশেষ
করে স্কুল-কলেজে পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সেতু এলাকাটি ৩
থেকে ৪ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন গ্রামবাসীর এবং স্কুল-
কলেজ যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, মহদিপুর গ্রামের বাসিন্দা
মঞ্জুরুল হক, জাহাঙ্গীর আলম ও মহেশপুর গ্রামের সুশিল চন্দ্র রায় বলেন, ঠিকাদার
ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভেঙ্গে ফেলার আগে বিকল্প কোন রাস্তা নির্মাণ না করার কারণে
এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরও সেদিকে নজর দেয়নি। ফলে
ঠিকাদার তার নিজ খেয়ালখুশি মতো মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে নির্মাণ কাজ না
করেই উধাও হয়ে গেছেন। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে গ্রামবাসীরা নিজ
উদ্যোগেই বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের মন্ডল বলেন, ঠিকাদারকে সেতুর নির্মাণ কাজটি
করার জন্য একাধিকবার বলা হলেও সেটি করা হচ্ছে না। ঠিকাদার শুধু আজ করবো, কাল
করবো বলেই দিন পারছে। তবে বর্তমানে সেতুর স্থানে পানি জমে থাকায় ঠিকাদার
ইচ্ছে করলেও কাজ করতে পারবে না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ৩২লাখ ৫২হাজার
৬৫৩টাকা ব্যায়ে ওই সেতু নির্মাণ কাজ পেয়েছেন পার্বতীপুর উপজেলার নতুন বাজার
এলাকার সাদেকুল ইসলাম নামের ঠিকাদার। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুর জন্য
তাকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ৬৫দিনে কাজটি শেষ করতে হবে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু
করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করতে পারেননি ঠিকাদার।