নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় মনিরা আকতার ময়না (৩২) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার পর
লাশ পুকুরে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামী লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে লুৎফর
রহমান, শ্বশুর নবির হোসেন ও তার বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। গত সোমবার দুপুরে এ হত্যাকান্ডের
ঘটনা ঘটে বলে স্থানিয়রা ধারণা করছেন।
জানা গেছে, সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের খামার দশলিয়া গ্রামের নবির হোসেনের
ছেলে কসমেটিক্স ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের সাথে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের সুবর্ণদহ
গ্রামের মফিজুল হকের মেয়ে মনিরা আকতারের ২০০৩ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে
দ্বাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। এরই মধ্যে ময়না শারীরিক প্রতিবন্ধী এক মেয়ে সন্তানের জন্ম দেয়। ১৩
বছর বয়সের মেয়েটি তার নানার বাড়িতে অবস্থান করে। দাম্পত্য জীবনে লুৎফর প্রায়ই ময়নাকে
মানুষিকভাবে নির্যাতন ও শারীরিকভাবে মারপিট করলেও তাদের ঘরে আসে চার সন্তান। গত সোমবার
দুপুরে ময়না বাবার বাড়িতে বেড়াতে যেতে চাইলে লুৎফরের সঙ্গে তার ঝগড়া হলে মারপিটের শিকার
হয়। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশের পুকুরে লাশ পড়ে
থাকতে দেখতে পায় স্থানিয়রা। পরে খবর পেয়ে তার লাশ পুকুর থেকে রাত পৌনে ১২ টার দিকে উদ্ধার
করে পুলিশ। এদিকে ময়নার বড় ভাই রুবেল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকায় লুৎফর রহমান
দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। গত ছয় মাস ধরে তিনি নতুন বউকে ঘরে তোলার জন্য ময়নাকে চাপ দিয়ে
আসছিল। কিন্তু ময়না তাতে রাজি হয়নি। এ কারণে তার বোনকে মারপিট বা শ্বাসরোধে হত্যার পর
লাশ পুকুরে ফেলে পালিয়েছে লুৎফর ও তার পরিবারের লোকজন। বোনকে হত্যার বিচার চেয়ে তিনি
থানায় হত্যা মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান’। সাদুল্যাপুর থানার উপ-পরিদর্শক রেজাউল করীম
জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের সময় তার নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। পুকুরে লাশ
ভাসতে থাকলেও পেটে পানি ছিল না। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গতকাল মঙ্গলবার গাইবান্ধা আধুনিক সদর
হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সাদুল্যাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফরহাদ ইমরুল কায়েস
বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি হত্যাকান্ড কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে
স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।