আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও সদর থানা ডিউটি অফিসারের কাছে একটি বেঞ্চে এক কিশোরী তার মায়ের কোলে মাথা রেখে কাতরাচ্ছে। কাছে গিয়েই এই প্রতিবেদক জানতে চাইলো চাচী আপনার মেয়ের কি সমস্যা।
উত্তরে ওই মহিলা বলেন বাবা আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী কথা বলতে পারে না। গত ২৯ এপ্রিল আশরাফুল ইসলাম নামে এক প্রতিবেশী ধর্ষন করেছে। এলাকার মানুষ ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করতে চাপ সৃষ্টি করছে। তাই ভয়ে মেয়েকে নিয়ে দু’দিন যাবত থানায় অবস্থান করছি।
ওই ধর্ষক আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু ভয়ে বাসায় যেতে পারছি না?
ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা গড়েয়া ঢাঙ্গীপুকুর এলাকায়।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা জানান, আমার স্বামী ও আমি দিন মজুরের কাজ করি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাড়িতে প্রতিবন্ধী মেয়ে একাই থাকে। প্রতিদিনের ন্যায় ২৯ এপ্রিল আমরা স্বামী স্ত্রী কাজের জন্য সকালে বের হই। প্রতিবন্ধী মেয়েটি বাসা একাই থাকার কারণে দুপুরে প্রতিবেশী আশরাফুল ইসলাম ঘরে ঢুকে জেরপূর্বক ধর্ষন শুরু করে। এক পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মেয়েটি গংগানী (চিৎকার) করতে থাকলে প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে দেখে ধর্ষক আশরাফুল। এ সময় লোকজনকে ধাক্কা দিয়ে আশরাফুল দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি এলাকায় জানা জানি হয়ে গেলে আশরাফুল প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করে। মিমাংসা না করায় ওই প্রতিবন্ধী পরিবারকে আশরাফুল নানা ভাবে হুমকী প্রদান করেন। কিন্তু প্রতিবন্ধীর মা বিচারের দাবিতে ঠাকুরগাঁও থানায় চলে আসেন।
পরে ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান ওই ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার নির্দেশ প্রদান করেন। গত রবিবার ওই প্রতিবন্ধী ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীা সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১ মে) প্রতিবন্ধীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক আশরাফুল ইসলামকে আসামী করে ঠাকুরগাঁও থানায় নারী শিশু নির্যাতর দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা জানান, ভয়ে বাসায় যেতে পারছি না। আশরাফুলের লোকজন মামলা না করার জন্য নানা ভাবে হুমকী প্রদান করছেন। নিজের ও মেয়ের নিরাপত্তার জন্য থানায় আছি।
ঠাকুরগাঁও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, ধর্ষনের বিষয়ে কোন আপস নেই। মামলা রুজু হয়েছে। আসামী গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।