অনলাইন ডেস্কঃ
রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় চুরি ও মারামারির অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলায় ১১ মাসের শিশু এবং মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়ার অভিযোগে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মারুফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সাজ্জাদ হোসেনকে প্রত্যাহার করে এপিবিএন মহালছড়িতে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) কাজী মাহবুবুল আলমকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহারপূর্বক ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করা হচ্ছে। এ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে।
একইসঙ্গে পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হক মিরপুর জোনের ডিসি এবং এডিসিকে পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিবিড়ভাবে মামলা তদারকের কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুর থানায় করা মারামারি, চুরি, ঘর-বাড়ি ভাঙার মামলায় মৃত ব্যক্তি এবং ১১ মাসের এক শিশুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
এতে মৃত ব্যক্তির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন এবং ১১ মাসের শিশুর বয়স দেখানো হয়েছে ৩০ বছর।এ কারণে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক মারুফুল ইসলামকে সশরীরে হাজির হয়ে আগামী ১৬ মে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম।
এর আগে, আসামি পক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মামলার বাদীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন।এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ২০ নম্বর আসামি রুবেল গত বছরের ৬ জুন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন।
অপরদিকে অন্য অভিযোগপত্রভুক্ত ১২ নম্বর আসামি আরিফুর রহমান ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৬ জুন মিরপুরের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের সময় আসামি রুবেলের বয়স ছিল ২০ দিন। বর্তমানে তার বয়স ১১ মাস। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে তাকে ৩০ বছরের যুবক দেখিয়েছেন। এছাড়া নিহত আরিফুর রহমান ঘটনার তিন বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছে- আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন আরিফুর রহমান।
যা মানবতার চরম লঙ্ঘন এবং নবজাতকের বিরুদ্ধে ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা মামলা করা আইনের লঙ্ঘন। আসলে মামলার বাদীর সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে অবৈধভাবে নিজে লাভবান হওয়ার জন্য সরেজমিনে না গিয়ে থানায় এসি রুমের মধ্যে বসে তদন্ত রির্পোট তৈরি করেছে।
এ কারণে তদন্ত কর্মকর্তা তার শপথ ভঙ্গ করেছেন।মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৭ তদন্ত কর্মকর্তা উপরোক্ত দুই আসামিসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আমার তদন্তকালে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বাদীর আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। এ অভিযোপত্রে মামলায় ভুইঁয়া মাহবুব হাসান রুজুকারী অফিসার (অফিসার ইনচার্জ মিরপুর মডেল থানা), এ এস আই আবুল হাসান, এ এস আই গোলাম কিবরিয়া, এ এস আই রায়হান ফেরদৌস, এ এস আই বিপ্লব কুমারসহ ১১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।