আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সালন্দর ইক্ষু খামারের এক নারী শ্রমিককে (২২) পাশবিক নির্যাতন করে শ্লীলনতার চেষ্টা করেছে ওই খামারের সুমন, মানিকসহ ৪ জন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত সুমন সালন্দর সিংপাড়া এলাকার মালেকের ছেলে ও মানিক ওই এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে।
স্থানীয় লোকজন ওই নির্যাতিতা নারী শ্রমিককে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা করেছে।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: রুকুনুজ্জামান জানান, অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ওই নারীকে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নারীর শরীরে একাধিক আঘাতে দাগ রয়েছে। তাকে প্রাথিমক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ধর্ষনের চেষ্টা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, অজ্ঞান অবস্থায় কিছুই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু রোগীর জামা কাপড় ছেড়া দেখে মনে হামলাকারীরা টেষ্টা করেছিল।
ওই নির্যাতিতা নারী শ্রমিকের স্বামী জানান, রাত ১১টায় বাড়িতে আমার স্ত্রী সন্তান ঘুমাচ্ছিল। হঠাৎ ঘরের দরজা ধাক্কা দিলে সে ঘুরে দেখে ৩/৪ তার মুখে চেপে ধরে। তুলে নিয়ে যায় পাশের এক ইক্ষু খামারে। ওই দূত্তরা আমার স্ত্রীর শরীরে পাশবিক নির্যাতন করে, শ্লীলনতা হানির চেষ্টা করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোক রাস্তা পাশের ইক্ষু খামার থেকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করায়।
জ্ঞান ফিরে ওই নির্যাতিতা নারী শ্রমিক জানান, আমার স্বামী কাজ শেষে প্রতিদিন রাতে বাড়ি ফিরে। হঠাৎ দরজা ধাক্কালে আমি বের হয়ে দেখি সুমন,মানিকসহ আরো দুজন আমার মুখ চেপে তুলে নিয়ে যায় পাশের একটি ইক্ষু খামারে। এ সময় সুমন,মানিকসহ তারা আমার শরীর অনেক মারপিট করে ধর্ষনের চেষ্টা করে। পরে আমার চিৎকারে সুমনসহ বাকিরা পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের নির্যাতনে আমি অজ্ঞান হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
তিনি আরো জানান, গত দু’দিন আগে সালন্দর ইক্ষু খামারে কাজের সময় সুমনের সাথে ঝগড়া বাঁধে। এ সময় সুমন ও তার লোকজন আমার শ্বাশুড়ি মারপিট করে। আর আমাকে প্রান নাশের হুমকী দেয়। পরে আমার শ্বাশুড়ি ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সুমনের বিষয়ে নালিশ করলে। তিনি আইনি আশ্রয়ে কথা জানান। পরে আদালতের মাধ্যমে সুমনকে নোটিশ পাঠানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিকান বিকেলে শ্বাশুড়িকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আজ (শুক্রবার) রাতে সুমন ও তার লোকজন আমাকে তুলে নিয়ে শরীরের ক্ষত বিক্ষত করে, ধর্ষনের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সালন্দর ইউপি সদস্য ইব্রাহিম জানান, শুনেছি ইক্ষু খামারে ওই নারী ও সুমন এক সাথেই কাজ করত। দুদিন আগে কথাকাটির জেরে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আজ তাকে সুমনসহ কয়েকজন তুলে নিয়ে গিয়ে পাশবিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে। লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
সদর উপজেলা সালন্দর ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুর হোসেন মুকুল জানান, সুমনের বিষয়ে ওই নারী অভিযোগ করলে আমি আইনি আশ্রয়ের পরামর্শ প্রদান করি। ওই নারীকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পেয়েছি।
নির্যাতিতার স্বামী ওসমান জানান, আমার স্ত্রীকে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় সুমন,মানিকসহ দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, নারী শ্রমিকের নির্যাতনের অভিযোগ থানায় এখন পর্যন্ত কেউ করেনি। অভিযোগ পেলেই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।