অনলাইন ডেস্কঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আটক চারজনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক ধারার আইনে অভিযোগ আনা হয়। মামলার আসামিরা হচ্ছেন শরিফুল, শাহীন ওরফে সানা, রাসেল, শান্ত, হৃদয় ও মুরাদ। তাঁদের মধ্যে হৃদয় কাতারে অবস্থান করছেন এবং মুরাদ এখন পর্যন্ত পলাতক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, হৃদয় গোসল করতে গিয়ে পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টরের খাল থেকে একটি ব্যাগ পায়। এ ব্যাগে বেশ কয়েকটি এসএমজি ছিল। সে শরীফুলকে জানায়। এরপর শরীফুল, শাহীন, রাসেল, শান্ত, হৃদয় ও মুরাদ এসব অস্ত্র নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়ে নেয় এবং বিক্রির চেষ্টা করতে থাকে। এসব আসামি লুকিয়ে রাখা অস্ত্রের একাংশের সন্ধান ঘটনাচক্রে পায়। কিন্তু এরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অস্ত্রের ব্যাপারে না জানিয়ে নিজেদের হেফাজতে রেখে দেয়। এসব আসামির হেফাজত থেকে আটটি অস্ত্র পাওয়া যায়। আটটি অস্ত্রের মধ্যে একটি শরিফুলের বাসা থেকে, দুটি শরিফুল, শাহীন ও শান্তর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পূর্বাচলের ৩ নম্বর সেক্টরের বন্ধু সিটি থেকে এবং রাসেলের দেওয়া তথ্যানুযায়ী পাঁচটি এসএমজি গতকাল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
রূপগঞ্জ থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানিয়েছেন, যেহেতু অস্ত্রগুলো আসামিদের হেফাজতে ছিল এবং তারা এগুলো বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখেছিল, এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। পুরো অস্ত্রের চালানের ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। তবে এ মামলার সূত্র ধরেই পুরো অস্ত্রের চালানের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হবে বলেও জানান তিনি। মামলার ছয় আসামির মধ্যে পলাতক দুজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে রূপগঞ্জে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের সহায়তায় পুলিশ রূপগঞ্জের পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টরের একটি খালে ডুবিয়ে রাখা ২১টি ব্যাগে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। শরিফ নামের একজন মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশ এ অস্ত্রের সন্ধান পায়। এখান থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৬২টি এসএমজি বা সাব-মেশিনগান, দুটি রকেট লঞ্চার, দুটি ওয়াকিটকি, পাঁচটি ৭ পয়েন্ট ৬২ বোরের পিস্তল, ৪৯টি রকেট লঞ্চার প্রজেক্টর, ৪২টি হ্যান্ডগ্রেনেড, ৪৪টি এসএমজির ম্যাগাজিন, বিপুল পরিমাণ টাইমফিউজ, ইগনাইটার ও গুলি। পরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পুলিশ আরো পাঁচটি এসএমজি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ঢাকা রেঞ্চের ডিআইজ শফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ১২ সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটির কাজ করছে। এ কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।