রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দীর্ঘ ১৩ বছর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চাকুরী ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আশুলিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিত্যক্ত চুল পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে ভাগ্য বোনার চেষ্টা আদিতমারীর নারীদের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর হলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সৌরভের অর্থের অভাবের চিকিৎসা হচ্ছে না। আশুলিয়া সাংবাদিক সমন্বয় ক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি’র সভাপতি হেলাল শেখকে প্রাণঢালা অভিনন্দন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের প্রাণহানি ধামরাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহতদের স্মরণে শোক সভা ও দোয়া 

নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশীরা কেন ইটালি যাচ্ছে?

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ জুন, ২০১৭
  • ৩৯৬ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় অভিবাসন বন্ধ আছে। কিনিয়েন্তু তারপরও বাংলাদেশ থেকে প্রায়ই লিবিয়া যাচ্ছেন বাংলাদেশী অভিবাসীরা। লিবিয়া গিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে এদের সবাই ইটালি প্রবেশ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। অবৈধ লিবিয়া গমন বন্ধ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। মন্ত্রণালয় থেকে ছড়ানো হচ্ছে সচেতনতামূলক প্রচারণা। বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, এভাবে বিদেশ গমন কতটা ভয়ঙ্কর। তারপরও অনেক বাংলাদেশি পাড়ি জমাচ্ছেন লিবিয়ায়। আইআরআইএন নিউজে প্রকাশিত একটি খবর বলছে, এর পেছনে অন্য কারণ আছে।

প্রায় ২০,০০০ বাংলাদেশী লিবিয়ায় কাজ করে। অবৈধ পথে আরো অনেকেই পাড়ি জমাচ্ছেন লিবিয়ায়। যারা যাচ্ছেন, তারা কি লিবিয়াতেই যাচ্ছেন নাকি অন্য উদ্দেশ্য আছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসীরা লিবিয়া হয়ে ইটালি যাওয়ার জন্যই এই পথ ধরেছে। এই বছরের ২২ মে পর্যন্ত  পরিসংখ্যান বলছেন ৫,৬৫০ জন বাংলাদেশী ইটালিতে অবৈধভাবে অভিবাসন নিয়েছে, যা সেখানে মোট অভিবাসীদের ১১ শতাংশ। ইতালির মেডিসিনস সানস ফ্রন্টারিসে অভিবাসীদের সংখ্যা ট্র্যাকিং কাজে কর্মরত আহমেদ আল রওশন জানান, ইটালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত বছর এই সময়ে মাত্র ১০ জন ইতালিতে অভিবাসী হয়েছিলো। যা ২০১৬ সালের শেষে দাঁড়িয়েছিলো ৭,৫৭৮ জনে।

তার মতে বাংলাদেশ থেকে ইটালিতে যাওয়া অভিবাসীরা নাকি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদল বছরের পর বছর লিবিয়ায় কাজ করার পরে নিরাপত্তার ভয়ে অন্য কোথাও চলে যায়। দ্বিতীয় দলটি হচ্ছে যারা ইস্তামবুল বা দুবাই হয়ে ত্রিপোলিতে প্রবেশ করে ইউরোপে ঢোকার পরিকল্পনা নিয়েই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১১ সালের দিকে ৫০,০০০ থেকে ৮০,০০০ প্রবাসী লিবিয়ায় বাস করতো। পরে সেই সময়ের গৃহযুদ্ধের কারণে নতুন করে পালাতে শুরু করে সেখানে বসবাসরত অভিবাসীরা। আহমেদ আল রওশন বলেন, বাংলাদেশ অভিবাসীদের ইউরোপে যাওয়ার জন্য ৭,০০০ থেকে ১০,০০০ ডলার দিতে হয়। বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ারও কোনো সরাসরি ফ্লাইট নেই। ইস্তামবুল হলে ত্রিপোলিতে যেতে হয়। সেজন্য গুণতে হয় ২০০ ইউরো আর দুবাই হয়ে গেলে দিতে হয় ৫০০ ইউরো। কখনো কখনো পাচারকারীরা ভূমধ্যসাগর হয়ে তাদের নিয়ে যায় লিবিয়ায়। গত বছরের হিসেব বলছে অন্তত ১,৫৬৯ জন প্রাণ হারিয়েছে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে।

সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো দেশেও অভিবাসী হয় বাংলাদেশিরা। ২০১৫ সালের হিসাব বলছে ৭০ লাখ মানুষ দেশের বাইরে বসবাস করছে। এবং দেশে অন্তত ১৫০০ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে। ১৯৭০ সাল থেকে বিদেশে কাজ করছে বাংলাদেশী শ্রমিকরা। বন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর কনভারসনের গবেষক এবং বাংলাদেশী অভিবাসী নিয়ে কাজ করা করা বেনজামিন ইটোল্ড  এই তথ্য জানান ।

বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা বলছেন, তারা লিবিয়ার অবস্থা সম্পর্কেও ঠিকভাবে জানেন না। এবং এজেন্সিগুলোর মিথ্যে প্রতিজ্ঞায় বিশ্বাস করে বসে। এজেন্সিগুলো কড়া নিরাপত্তা সম্বলিত এয়ারপোর্ট দিয়েও যাতায়াত করতে দেয়না। কখনো কখনো যাতায়াতের রুটটা এমন হয় যে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট থেকে ভারত, তারপর দুবাই, সেখান থেকে তুর্কি, তারপর লিবিয়া যেতে হয়।

ইটালিতে যাওয়ার বৈধ পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এভাবে ইটালি যাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে মনে করছেন অনেকে। ২০০৭ সালে ১১,০০০ বাংলাদেশি বৈধভাবে ইতালিতে যায়। এরপর প্রায় সমপরিমাণ যেতে থাকে ২০১৩ পর্যন্ত। ২০১৪ সালে ইতালির পলিসিতে কিছু পরিবর্তনের কারণে হুট করেই সংখ্যাটা কমে যেতে শুরু করে।

ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ফেডেরিকো ফোসি বলেন, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইটালি ভিসা দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে। তবে যেসব দেশের জন্য বিশেষ কোটা আছে সেই তালিকায় বাংলাদেশ নেই।

ইটোল্ড অবশ্য আরেকটি কারণ ব্যাখ্যা করেন, অভিবাসন মূলত একটি নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে। ইটালিতে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা এটাকে আরো বেশি প্রভাবিত করছে। পরিচিতদের অভিবাসনে উদ্বুদ্ধ করেন তারা।

মার্টেলি আইনের অধীনে ১৯৯০ সাল থেকে ইটালিতে বাংলাদেশি অভিবাসন চলছে। অন্তত ১০০,০০০ বাংলাদেশি এখন ইতালিতে বসবাস করছে এবং তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ইতালি থেকে বাংলাদেশীরা ১০০ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে বলেও জানা যায় বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে।

জার্মানিতে অভিবাসন কঠিন হয়ে পড়ছে, ব্রিটেনে প্রবেশ এখন অনেকটা কঠিণ। তাহলে অভিবাসীরা যাবে কোথায়। তাই ইটালিকেই আরেকটি কর্মক্ষেত্রে হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বাংলাদেশীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451