২০১৫ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরেই শিরোপাজয়ের লড়াই থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। আর এ বছর সেই ইংল্যান্ডের কারণেই বাংলাদেশ পেল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ। প্রায় এক যুগ পর আইসিসির এই এলিট প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ পেয়েই বাংলাদেশ চলে গেল শেষ চারের লড়াইয়ে। আইসিসির যে কোনো প্রতিযোগিতায় এবারই প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালের টিকেট পেল লাল-সবুজের দল। উঠে গেল নতুন উচ্চতায়।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিল মাশরাফি বাহিনী। তবে শেষ চার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আজকের ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের ফলাফল আসা পর্যন্ত। এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জিতে গেলে হতাশ হতে হতো বাংলাদেশকে। তবে শেষপর্যন্ত তেমনটা হয়নি। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৪০ রানের দারুণ জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। বিদায় নিতে হয়েছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়াকে। আর প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে ২৭৭ রানেই আটকে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। জয়ের কাজটা অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিল তখনই। কিন্তু ২৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। ছয় ওভারের মধ্যে ৩৫ রান সংগ্রহ করতেই হারিয়েছিল তিন উইকেট। একে একে সাজঘরে ফিরেছিলেন জ্যাসন রয়, অ্যালেক্স হালেস ও দারুণ ফর্মে থাকা জো রুট। ইংল্যান্ডের জয়ের আশা হয়তো ছেড়েই দিয়েছিলেন অনেকে।
কিন্তু তৃতীয় উইকেটে ১৫৯ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ওয়েন মরগান ও বেন স্টোকস। ঠিক যেভাবে গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ। মরগান-স্টোকসের জুটিতে ভর করেই জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। ৩২তম ওভারে ৮৭ রান করে দুর্ভাগ্যবশত রান আউটের ফাঁদে পড়েছিলেন মরগান। তবে স্টোকস শেষপর্যন্ত টিকে ছিলেন উইকেটে। ১০৯ বলে ১০২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছেন এই অলরাউন্ডার। শেষপর্যায়ে জস বাটলার খেলেছেন ২৯ রানের ইনিংস।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ট্রাভিস হেডের ৭১, অ্যারন ফিঞ্চের ৬৮, স্টিভেন স্মিথের ৫৬ রানের ইনিংসগুলোতে ভর করে স্কোরবোর্ডে ২৭৭ রান জমা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন মার্ক উড ও আদিল রশিদ। দুজনেই নিয়েছেন চারটি করে উইকেট।
আজকের এই জয়ের ফলে গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে পা রাখল ইংল্যান্ড। আর তিন ম্যাচে একটি জয় পেয়ে ইংল্যান্ডের সঙ্গী হলো বাংলাদেশ। গ্রুপের অপর দুই দল নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে ফিরতে হলো খালি হাতে। অস্ট্রেলিয়ার দুটি ম্যাচই পরিত্যক্ত হয়েছে বৃষ্টির কারণে। আর নিউজিল্যান্ড হেরেছে দুটি ম্যাচে। একটি হয়েছে পরিত্যক্ত।