গাইবান্ধা থেকে শেখ হুমায়ুন হক্কানী ঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার
বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার প্রকল্পের প্রায় অর্ধকোটি টাকা সংশিষ্ট প্রকল্প
সভাপতি ও পিআইও’র বিরুদ্ধে আতœসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তথ্য
অধিকার আইনে পাওয়া তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭
অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন (টিআর) নির্বাচনী এলাকা
বিশেষ (দ্বিতীয় পর্যায়), প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও
একটি পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার এবং বিভিন্ন ব্যক্তির
বাড়ীতে ও প্রতিষ্ঠানে সোলার প্যানেল স্থাপনে বরাদ্দ দেয়া হয় ৮৬ লাখ ৯৮ হাজার
৪৪৬ টাকা।
এরমধ্য উন্নয়ন খাতে ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার ২২৩ টাকার বিপরীতে ৪৭টি,ও
সোলার প্যানেল স্থাপনে সমপরিমান টাকার বিপরীতে ২৯টি প্রকল্প হাতে নেয়া
হয়। গত ১১মে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা এবং উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা এসব প্রকল্প অনুমোদনের জন্য জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন
কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠান। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ওই
মাসের ২২মে অনুমোদনের সুপারিশ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে
পাঠান। জেলা প্রশাসক ২৩ মে এসব প্রকল্প অনুমোদন করেন। চলতি বছরের ৩০
জুন পর্যন্ত এসব প্রকল্পের সংস্কার কাজ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া
হয়েছিল।কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে প্রকল্পগুলো কাগজ-কলমে শতভাগ বাস্তবায়ন
দেখানো হলেও বাস্তবে একটি প্রকল্পেও সংস্কার কাজ করা হয়নি। এরমধ্যে
উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের রাঘবপুর ছাদেক মেম্বারের বাড়ী থেকে
মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজের বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয় দুইলাখ
টাকা।
সাবেক ইউপি সদস্য ছাদেক আলী অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন থেকে এই
রাস্তাটির সংস্কার কাজ হয়না। ফলে বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি চলাচলে
অনুপোযোগি হয়ে পড়ে।গত মাস দেড়েক আগে শুনেছিলাম রাস্তাটি
সংস্কারে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো এক টুকরো মাটিও
ফেলা হয়নি। একই ইউনিয়নের তেলিয়া গ্রামের আলমের বাড়ী থেকে মানিক
চন্দ্র সরকারের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজে বরাদ্ধ দেয়া হয় দুইলাখ
টাকা। আলম প্রধানের ছেলে ফরহাদ প্রধান বলেন, কিছুদিন আগে আমাদের
বাড়ীর সামনে থেকে মানিক সরকারের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তার কাজের কথা
শুনেছি।কয়েকজন লোক এসে মাপযোগ করেও নিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো
মাটির কাজ শুরু হয়নি।
মানিক চন্দ্র সরকারের বড় ভাবি স্কুল শিক্ষক মতিহেনা রানী সরকার বলেন,
প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজের অনেক ছাত্রছাত্রী যাতায়াত করে।
বৃষ্টি পড়লে কাঁদার সৃষ্টি হয়। ৪-৫ বছর আগে এই রাস্তায় মাটির কাজ
হয়েছে। পড়ে আর হয়নি। একই উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ক্রোড়গাছা
বুড়িরভিটা থেকে গাছুপাড়া শাহআলমের দোকান পর্যন্ত এবং
বাজুনিয়াপাড়া ধীরেন ওরফে হীরেন মাষ্টারের বাড়ী থেকে চিত্তরঞ্জনের বাড়ী
পর্যন্ত রাস্তা মেরামত কাজে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। খোঁজ
নিয়ে জানা গেছে, অবশিষ্ট প্রকল্পগুলোরও একই অবস্থা। একটিরও সংস্কার কাজ
হয়নি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ জহিরুল
ইসলাম তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমনটা হওয়ার
কথা নয়। খোঁজ খবর নিয়ে সংশিষ্ট প্রকল্প সভাপতিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেয়া হবে।