গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে এক
স্কুল ছাত্রের সম্পত্তি আত্তসাৎ করতে স্কুল ম্যানেজিং
কমিটির সদস্য জোর করে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর
নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকালে জেলার
মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে জলিরপাড় জে কে এম বি মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ের
৮ম শ্রেণির ছাত্র আকাশ রায় ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির
সদস্য প্রভাবশালী খলিল শেখের বিরুদ্ধে মুকসুদপুর থানায়
লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
আকাশ রায় বলে, দক্ষিণ জলিরপাড় গ্রামে আমাদের বসত
বাড়িতে ১৬ শতাংশ জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৮ শতাংশের
মালিক আমার পিতা ননী রায়। বাকী ৮ শতাংশের মালিক
আমি নিজে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য খলিল শেখের
চাচাতো বোন দোলেনা বেগম আমার বাবার কাছ থেকে ৮
শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। আমার ৮ শতাংশ জমি গ্রাস
করতে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে। মঙ্গলবার স্কুলে আমার কৃষি
শিক্ষা পরীক্ষা ছিল। সকালে স্কুলে পরীক্ষা দিতে গেলে স্কুল
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য খলিল শেখ আমাকে স্কুল গেটের
সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায়। জলিরপাড় বাজারের মোহরার
সঞ্জয় বাড়ৈর দোকানে নিয়ে জোর করে ৪টি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর
নেয়। এ ব্যাপারে আমি মুকসুদপুর থানায় লিখিত
অভিযোগ দায়ের করেছি।
আকাশের নানা বিকাশ কুন্দা জানান, অন্তত ৪ বছর আগে
আকাশের মায়ের সাথে বাবা ননী রায়ের ছাড়াছাড়ির হয়ে
যায়। তখন থেকে ননী মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বইল
গ্রামে বিয়ে করে সেখানে সংসার করছে। এ সময়
আদালতের নির্দেশে ননী দক্ষিণ জলিপাড় গ্রামের নিজের ১৬
শতাংশ বসত বাড়ির জমির অর্ধেক ৮ শতাংশ ছেলে আকাশের
নামে লিখে দেয়। সেখানে আকাশ তার মায়ের সাথে বসবাস
করছে। ননী সম্প্রতি তার অংশের ৮ শতাংশ জমি দোলেনার
কাছে বিক্রি করেছে। খলিলের নেতৃত্বে তারা আরো ৮
শতাংশ জমি আতœসাৎ করতে আকাশের কাছ থেকে জোর
করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি অনুনয় বিনয় করে
খলিলের কাছে স্ট্যাম্প ফেরৎ চেয়েছি কিন্তু খলিল ফেরত দেয়নি।
জলিরপাড় বাজারের মোহরার সঞ্জয় বাড়ৈ বলেন, আকাশ রায়ের
নামে ১ শ’ টাকার ২টি ও ৫০ টাকা মূল্যের ২টি নন
জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প আমার কাছ থেকে খলিল শেখ ক্রয়
করেছে। আকাশের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়ার সময় আমি
দোকানে ছিলাম না। এ স্ট্যাম্পে আকাশের স্বাক্ষর নেয়া
হয়েছে কিনা তা আমি জানিনা।
অভিযুক্ত স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য খলিল শেখ
অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, এখানে এ ধরনের কোন
ঘটনা ঘটেনি। আমাকে হেয় করতে প্রতিপক্ষ আকাশকে
দিয়ে বানোয়াট, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করিয়েছে।
আমি গত ৩ বার বিপুল ভোটে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির
সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। স্কুলের প্রতিটি শিক্ষক,
শিক্ষার্থীর ও অভিভাবকের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক
রয়েছে। আমার চাচাতো বোন দোলেনা দক্ষিন জলিরপাড়
গ্রামে আকাশের বাবার কাছ থেকে সম্পত্তি কিনেছে।
তাকে আকাশের ৮ শতাংশ জমি দখল করে দেয়ার আমার কোন
ইচ্ছা নেই।
মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর
রহমান বলেন, আকাশ রায়ের লিখিত অভিযোগ আমরা
পেয়েছি। এটি তদন্তের জন্য জলিরপাড় পুলিশ ক্যাম্পের
ইনচার্জ এস আই শাহ্ধসঢ়; জামালকে নির্দেশ দিয়েছি।
অভিযোগপত্রটি তার কাছে পাঠানো হয়েছে।