নীলফামারী প্রতিনিধি :
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যায়
ক্ষতিগ্রস্থদের দুর্ভোগ চরমে আকারে ধাবিত হচ্ছে। রোববারের
প্রবল বন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া পরিবারগুলো বাড়ীতে ফিরলেও
সরকারীভাবে তেমন সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এ বন্যায়
তিস্তার পাড়ের ৩০১টি পরিবারের বসতভিটা বিলিন হলেও মাত্র ৮০টি
পরিবারকে সরকারীভাবে সহায়তা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে ২শ ৮০
পরিবারকে সরকারীভাবে কোন সহায়তা প্রদান করা হয়নি। বন্যায়
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য যে ত্রান বিতরন করা হয়েছে তা
প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।তাই জনপ্রতিনিধি সহ
বন্যায়ক্ষতিগ্রস্থরা তাদের পাশে সমাজের সকল বিত্তবানদের দাড়ানোর
আহবান ।
স্বরনের কালের এ ভয়াবহ বন্যার তিস্তাসহ ৮টি বাধ, ডিমলার১০টি
রাস্তা ও ৪টি কালভার্ট, সাড়ে ৭ কোটি টাকা মাছ ও কৃষি
বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন ৩শতাধিক একর জমির ধান
বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বুধবার বিকালে পুর্ব ছাতনাই
ইউনিয়নের তিস্তার বাধে বিজিবির উদ্দ্যেগে ক্ষতিগ্রস্থ ১৫০
পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরন করেন ৭ বর্ডার গার্ড
ব্যাটলিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহফুজ উল বারী। শুকনো
খাবারের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, তেল, চিড়াসহ ৭টি আইটেম। এ
সময় থানারহাট কোম্পনি কমান্ডার সুবেদার মশিউর রহমান, ইউপি
চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার বিকালে বিজিবি উদ্যোগে একই এলাকার খোকার
চরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১শ ৭৭জনকে স্বাস্থ্য সেবা ও বিনামুল্যে ঔষধ
প্রদান করা হয়। স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেন মেজর ডাঃ আফসানা
মাহামুদা। রংপুর ৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটলিয়ানের অধিনায়ক লে.
কর্নেল মাহফুজ উল বারী জানান, গত ৩দিন থেকে তিস্তার বন্যায়
ক্ষতিগ্রস্থ সাড়ে ৪শ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরন করা হচ্ছে।
আগামী শনিবার খগাখড়িবাড়ী কিসামত ছাতনাই গ্রামে ৩শ
পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরন করা হবে।
বুধবার দুপুরে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫
সেন্টিমিটার নিজ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজের
৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়ে। তিস্তার পানি ক্রমাগত কমছে বলে
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে।
ডিমলা উপজেলায় বন্যায় ৮হাজার ৬৮৫ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বরাদ্দ
কম থ্ধসঢ়;াকার কারনে ৩হাজার ৪শ পরিবারকে শুকনো খাবার দেয়া
হয়েছে মর্মে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস দাবী করেছেন।
তিস্তার পাড়ের অধিকাংশ পরিবার এখনও ত্রান ও শুকনো খাবার তেমন
পায়নি মর্মে অভিযোগ করেন। যে পরিমান শুকনো খাবার বিতরন
করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল মর্মে জানায়
ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান।
পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান ও
খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন বলেন,
সরকারীভাবে ইতিমধ্যে ত্রান বিতরন করা হলেও শুকনো খাবারের সংকট
তাদের ইউনিয়ন গুলোতে রয়েই গেছে। আমরা সরকার সহ বেসরকারী
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,কোম্পানী ও সমাজের বিত্তবানদের দ্রুত
সময়ের মধ্যে বন্যাত্বদের পাশে দারানোর আহবান জানাই।
আমাদের এলাকায় যে পরিমান সরকারী ত্রান পাওয়া গেছে তা দিয়ে
বন্যাত্বরা উপস্থিত সংকট মোকাবেলা করে কোনো রকমে পরিবার-
পরিজন নিয়ে দিনাদিপাত করলেও প্রয়োজন
খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আরো সরকারী ত্রানের। বর্তমান সরকার
বন্যাত্বদের ব্যাপারে অনেক আন্তরিক রয়েছেন,তাই আমরা আশাবাদী
খুব শীঘ্রই সরকার আবারও প্রয়োজনের তুলনা মাফিক ত্রান বরাদ্দ
দিবেন ।
এদিকে তিস্তায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে
বাঁধের রাস্তায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ
পানি এবং খাবারে তীব্র সংকট। বন্যা কবলিত এলাকায় সরকারী
ত্রাণ সামগ্রী এলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম বলেন, তিস্তায়
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য ৯৩ মেট্রিক টন চাল ও নগত ৫লক্ষ
টাকা বিতরন করা হয়েছে। কিন্তু কিছু ইউনিয়নের বন্যায়
ক্ষতিগ্রস্থ কোন পরিবার কেন শুকনো খাবার পায়নি তা তদন্ত করে
দেখা হচ্ছে।