জেলা ক্রাইম রিপোর্টার নীলফামারী : নীলফামারীর ডোমারে বোড়াগাড়ি
ইউনিয়নের নয়ানী বাগডোকরা মাস্টারপাড়া গ্রামে অতুল চন্দ্র রায় (৬৫)
নামের এক গৃহকর্তাকে হত্যা করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ
নিহতের নাতিসহ তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, নিহতের নাতি (মেয়ের ছেলে) প্রেমানন্দ রায়ের ছেলে
সুমন চন্দ্র রায় (১৬), তার অপর দুই বন্ধু একই ইউনিয়নের পশ্চিম বোড়াগাড়ি
কাউয়াতলী গ্রামের সকাল চন্দ্র রায়ের ছেলে প্রকাশ চন্দ্র রায় (১৭) ও রফিকুল
ইসলামের ছেলে মো. নিশান (১৭)। তারা তিনজনই ডোমার বহুমুখী উচ্চ
বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর ছাত্র বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার তাদেরকে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৬৪ ধারায়
জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য বিকেলে আদালতে সোপর্দ্দ করে। ডোমার থানার
এসআই আরমান আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজ বাড়িতে হত্যার শিকার হন
অতুল চন্দ্র রায়। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী দেবমায়া রাণী রায় (৫৫) বাদী হয়ে
বৃহস্পতিবার রাতে ডোমার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ
লাশ উদ্ধার করে শুক্রবার নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত
সম্পন্ন করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সুমনের নানার (আজু) কাছে টাকা আছে
সেটি জানতো তাঁর আপন নাতি। ওই টাকা নেয়ার জন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে
পরামর্শ করে সুমন। গত ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে সুমনের মামীকে আনতে
ডালিয়ায় যায় তার নানী (আবো)। নানুর একা বাড়িতে থাকার সুযোগে
সুমন দুই বন্ধুকে নানুর ঘরে রক্ষিত টাকা আনতে বাড়িতে ঢুকিয়ে দেয়।
তারা ৩২ হাজার টাকা নিয়ে আসার সময় নানু (অতুল) টের পেলে দুই বন্ধু
মিলে দাদুকে পিছন দিকে হাত বেধে নাকে মুখে টেপ আটকিয়ে দিলে
অতুল চন্দ্র শ্বাসরোধে মারা যান। পরে সুমন বাড়িতে ঢুকে দেখে তার নানু
(আজু) মারা গেছেন। পরে সে স্থানীয়দের কাছে বিষয়টি অশ্বীকার করে।
পুলিশ মঙ্গলবার ভোরে নিশানকে আটক করে তার কাছে আট হাজার টাকা
উদ্ধার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সুমন ও প্রকাশকে আটক করে।
প্রকাশের কাছে ১৭ হাজার পাঁচশ টাকা (সুমনের ভাগসহ) উদ্ধার করেন।
ডোমার থানার এস আই আরমান আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া ৩২ হাজার টাকার মধ্যে ২৫ হাজার পাঁচশ
টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, বাকী টাকা তারা খরচ করে ফেলেছে বলে পুলিশের
কাছে স্বীকারও করেছে তারা।
ঘটনার বিবরনে জানায়, নিহত অতুল চন্দ্র রায়ের ছেলে বিপুল চন্দ্র রায় (৩৫)
দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকেন। ওই বাড়িতে বিপুলের বাবা, মা ও স্ত্রী বসবাস
করেন।
ওই দিন (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিপুলের মা তার স্ত্রীকে
আনতে উপজেলার ডালিয়া যায়। এসময় অতুল চন্দ্র রায় একাই বাড়িতে
অবস্থান করার সুযোগে নাতী সুমন ও তার বন্ধুরা বাড়িতে ঢুকে অতুল চন্দ্র
রায়ের হাত পা ঁেবধে নাকে ও মুখে টেপ আটকিয়ে দিয়ে বাড়ির গচ্ছিত ৩২
হাজার টাকা নিয়ে যায়।
অতুল চন্দ্র রায় শ্বাসরোধে মারা গেলে বিকেল পাঁচটার দিকে এলাকায়
বিষয়টি জানাজানি হয়। পুলিশ খবর পেয়ে রাত আটটার দিকে লাশ উদ্ধার করে।