অনলাইন ডেস্কঃ :
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, বিশ্বকে অবশ্যই ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং ধর্মের অপব্যাখ্যা সম্পর্কে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘অশুভ শক্তি এখনো ধর্মভিত্তিক জাতি অথবা রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টায় লিপ্ত যা আমরা লক্ষ্য করি।
কিন্তু বিশ্ববাসীকে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’।
আজ শুক্রবার হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীর বনানী পূজা মণ্ডপে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি জনগণের সঙ্গে জনগণের অথবা জাতির সঙ্গে জাতির মধ্যে বিরোধের কারণে জনগণ বিভ্রান্ত হয়, এমন কোনো ধর্মীয় বাণী অথবা বার্তার অপব্যাখ্যা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অতীতে ধর্মভিত্তিকে রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে জাতিতে জাতিতে বহু সংঘাত হয়েছে, যুদ্ধ হয়েছে। ধর্মের নামে মনুষ্যত্ব, ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা ভুলুন্ঠিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা এখনো প্রত্যক্ষ করছি, একটি অশুভ মহল ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আবদুল হামিদ বলেন, কোনো ধর্ম নয় বরং ধর্মনিরপেক্ষতা হবে একটি জাতি ও দেশ গঠনের ভিত্তি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কোনো একক ধর্ম নয় বরং সকল ধর্মের অনুসারীদের নিয়ে গড়ে তুলতে হবে ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সৌহার্দ্যময় সমাজ ও রাষ্ট্র। যেখানে সকল ধর্মের লোক পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিঞ্চুতা, উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।
তিনি বলেন, ধর্মীয় উৎসব উদযাপনে ভিন্নতা থাকবে তবে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানসহ সকল ধর্মের অনুসারীদের চেতনা ও মূল সুর একই। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সকল ধর্মের লোক নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অজর্ন করেছি। আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। বাংলাদেশের প্রতিটি ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে পালন করছে।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ যাতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সুফল ভোগ করতে পারে এবং বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, এ জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
এর আগে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ আয়োজিত সেখানকার পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন সিকদার, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাস চন্দ্র ঘোষ এবং সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু কুমার দাস।