অনলাইন ডেস্কঃ
নারায়ণগঞ্জ-সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে শিশু অপহরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাঁর নাম সাহাবউদ্দিন। জানা গেছে, তিনি ১৭ শিশুকে অপহরণ করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আদমজীনগরে র্যাব ১১-এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাব ১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান জানান, অপহরণ করা হতো নানা বয়সী শিশুদের। এরপর বোধশক্তিহীন করার জন্য তাদের শরীরে প্রয়োগ করা হতো বিশেষ ইনজেকশন। নাকে ব্যবহার করা হতো একধরনের ড্রপ। এর ফলে শিশুরা নির্দেশমতো কথা বলে ও আচরণ করে। এ অপহরণ চক্রের হোতা সাহাবউদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য উঠে এসেছে।
র্যাব জানায়, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলিস্তানের রাজ রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় সংঘবদ্ধ শিশু অপহরণ ও পাচারকারী চক্রের মূল হোতা সাহাবউদ্দিন ওরফে সেলিম ওরফে সাহাবকে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছর ২৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বন্দর এলাকার আট বছর বয়সী শিশু বায়েজিদ অপহরণের পর শিশু অপহরণ ও পাচারকারী এই চক্রের দুই নারী সদস্যসহ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হয় শিশু বায়েজিদ।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা শিশু অপহরণকারী চক্র নিয়ে কাজ করছিলেন। গত ডিসেম্বর মাসে বন্দর থানা থেকে অপহৃত শিশু বায়েজিদকে উদ্ধার করতে গিয়ে একটি চক্রের সন্ধান পান বলে জানান তিনি। এই চক্রটি মূলত নারায়ণগঞ্জ-সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় কাজ করত।
এই চক্রের ছয়জনকে এর আগেই বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূল হোতা মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছিল না। গতকাল রাজধানীর গুলিস্তান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। সাহাবউদ্দিন ১৭ শিশুকে অপহরণের কথা স্বীকার করেছেন। তার মধ্যে নয়জনকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া এই চক্রের হাতে অপহৃত দুই শিশু মাত্রাতিরিক্ত অচেতন করার ওষুধের প্রয়োগের কারণে মারা যায় বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা। লাশগুলো নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া পাঁচ থেকে ছয় শিশুকে বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়। পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন গ্রেপ্তার সাহাবুদ্দিন।