অনলাইন ডেস্কঃ
দেশে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৫৬ পয়সা কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের দাম কমানোর ওপর গণশুনানিতে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এতদিন বিদ্যুৎ খাত নিয়ে যত গণশুনানির আয়োজন করেছে, তার সবই ছিল দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর। দাম কমানোর জন্য কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার গণশুনানির আবেদন করা হলেও এতদিন তাতে সায় মেলেনি বিইআরসির পক্ষ থেকে।
প্রথমবারের মতো ক্যাবের আবেদন আমলে নিয়ে আজ এই গণশুনানির আয়োজন করে বিইআরসি। যেখানে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ তুলে ধরে পাইকারি পর্যায়ে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের বর্তমান উৎপাদন মূল্য ৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমিয়ে ৩ টাকা ৩৪ পয়সা করা সম্ভব বলে জানান ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে এবং আমরা বলতে চাচ্ছি যে এক টাকা ৫৬ পয়সা পার ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এই ব্যয় সংকোচন করতে গেলে হয়তো আমরা এক টাকা ৫৬ পয়সা কমাতে সফল হব না। কিন্তু ৫৬ পয়সা কমাতে যে সফল হব না, তা কিন্তু নয়।’
তবে এই দামে বিদ্যুৎ দিতে হলে সরকারের কাছ থেকে ঋণ নয়, বছর বছর প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির প্রয়োজন বলে জানান পিডিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আমের আলী।
এ সময় বক্তব্য তুলে ধরেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও। তাঁদের অনেকে বিদ্যুৎ খাতে দেওয়া ভর্তুকি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘ভর্তুকি শব্দটার ভেতরেই এমন একটা সেন্স আসে যে এইটা হলো লিল্লাহে টাকাটা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটাকে কেন বরাদ্দ বলা হবে না? জনগণ তো সরকারকে আগাম টাকা দিয়ে রেখেছে। এখন আমাদের তিন লক্ষ কোটি টাকা হলো বাজেট। এই টাকাটা দেয় কারা? দেয় কিন্তু আমাদের এই ভোক্তাসাধারণ।’
গণশুনানির প্রশ্নোত্তর-পর্বে বিদ্যুৎ খাত জনগণের নয়, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা।
বিইআরসির আইন অনুযায়ী শুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে।