অনলাইন ডেস্কঃ
চলন্ত বাসে ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পাঁচ পরিবহন শ্রমিকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনার ৫০ দিন পর আজ রোববার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুপুরের অরণখোলা ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকী টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, অভিযোগপত্রে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ায় ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলীর (৫৫) এবং তিন সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫), জাহাঙ্গীরের (১৯) বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত ২০০৩) ৯-এর তিন ধারায় গণধর্ষণের অভিযোগ এবং দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ, ২০১ ধারায় লাশগুম এবং ৩৪ ধারায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে সাক্ষী করা হয়েছে ৩২ জনকে। তাদের মধ্যে পুলিশ, চিকিৎসকসহ পাঁচ থেকে ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন।
গত ২৫ আগস্ট রাতে বগুড়ায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাসে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন রূপা। রাতে মধুপুরে বনের ভেতর সড়ক থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৬ আগস্ট তরুণীর পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে লাশ দাফন করা হয় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে। গত ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় গিয়ে লাশের ছবি ও পরনের সালোয়ার কামিজ দেখে শনাক্ত করেন তরুণীর বড় ভাই হাফিজুর রহমান।
রূপার বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আছানবাড়ী গ্রামে। তিনি ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজে এলএলবি বিষয়ে অধ্যয়নরত ছিলেন। তাঁর ভাই হাফিজুর রহমান চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, রুপাকে হত্যার পর ময়মনসিংহ-বগুড়া রুটে চলাচলকারী ছোঁয়া পরিবহনের শ্রমিকরা পরের দিন থেকেই স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পরে চালকসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের কাছে তারা রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। গত ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছে।
৩১ আগস্ট রূপার লাশ উত্তোলন করে তাঁর ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে লাশ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সাইফুর রহমান খান প্রতিবেদন জমা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন মাথায় আঘাতজনিত কারণে রূপার মৃত্যু হয় এবং মৃত্যুর আগে রুপাকে ধর্ষণ করা হয়।