বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

বড়লেখায় ধামাই নদীর ভাঙনের মুখে রাস্তা ও ফসলি জমি

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৭
  • ৪৫২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আব্দুর রহিম, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের বড়লেখা
উপজেলায় ধামাই নদীর বড়লেখা সদর ইউনিয়ন অংশে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া (খাঁটি)
দিয়ে মাছ শিকার চলছে। নদীর টেকাহালী ব্রিজ এলাকা থেকে সোনাতোলা ব্রিজ
পর্যন্ত কিছুদূর পর পর বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে পানির স্বাভাবিক
প্রবাহ ও মাছের অবাধ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে
নদীসংলগ্ন গ্রামীণ রাস্তা ও ফসলি জমি।

এদিকে দীর্ঘদিন থেকে এভাবে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হলেও মৎস্য বিভাগ ও
উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
ক্ষেতের জমি, রাস্তা রক্ষা ও অবৈধ বেড়া (খাঁটি) উচ্ছেদের জন্য মৎস্য
বিভাগ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি এলাকাবাসী। অথচ মৎস্য
রক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের ১৯৫০ এর ২(৬) অনুযায়ী চলমান নদীতে খাটি/স্থায়ীভাবে
বাঁধ এবং ভেল জাল দিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

স্থানীয় সূত্র ও অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলায় ধামাই নদীর সদর
ইউনিয়ন অংশে মহদিকোনা গ্রামের আব্দুল মনাফ, আব্দুল হামিদ, ছানই মিয়া,
মতিউর রহমান ও সোনাতোলা গ্রামের ব্রিটিশ, শৈলেশ, ইউনুছ, মাসুক, নির্মলসহ
এলাকায় কতিপয় ব্যক্তি বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছেন। প্রতিবছরই তারা
এখানে বাঁশের বেড়া দিয়ে থাকেন। এতে বেড়ায় পানি আটকে টেকাহালী-সোনাতোলা
গ্রামের রাস্তা ভেঙে নদীতে পড়ছে। বেড়া সংলগ্ন ক্ষেতের জমির মাটিও ভেঙে
পড়ছে নদীতে। টেকাহালী ব্রিজ এলাকা থেকে হাকালুকি হাওরের দশঘরি পর্যন্ত
নদীতে অন্তত ১০০টির উপরে অবৈধ বেড়া (খাঁটি) বাঁধ রয়েছে। এতে মাছের অবাধ
চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদীসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে পাটনা, সোনাতোলা, ছিকামহল
গ্রামসহ আশপাশ এলাকার লোকজন ও সোনাতোলা উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাতোলা সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেকাহালী ফুরখান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
যাওয়া আসা করেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে টেকাহালী ও সোনাতোলা গ্রামে গেলে দেখা যায়, টেকাহালী
ব্রিজ থেকে সোনাতোলা ব্রিজ পর্যন্ত আনুমানিক দেড়কিলোমিটারের মাঝে অন্তত
১০টি বেড়া (খাঁটি) স্থাপন করে মাছ শিকার চলছে। আব্দুল মনাফের বেড়া থেকে
সুমন বিশ্বাসের বাধ পর্যন্ত অন্তত দেড়শমিটার রাস্তা ভেঙে নদীতে পড়েছে।
বেড়ার ফলে পানির প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ছিকামহল গ্রামের বাসিন্দা ইয়াছিন আলী ও সোনাতোলা গ্রামের বাসিন্দা সমছ
উদ্দিন গতকাল রবিবার (০৫ নভেম্বর) বলেন, ‘নদীতে ১০ থেকে ১২টি বেড়া
(খাঁটি) দেওয়া হয়েছে। খাঁটি দেওয়ায় অন্তত এক হাজার একর জমিতে ধান লাগানো
যায়নি। অবাধে পোনা মাছ নিধন করা হচ্ছে। অনেক অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো
প্রতিকার হয়নি। টাকা-পয়সা দিয়া সব ম্যানেজ করা হইছে।’

এলাকাসীর পক্ষে অভিযোগকারী শিক্ষক আব্দুল মন্নান বলেন, ‘অভিযোগ দেওয়ার পর
পুলিশ ও মৎস্য অফিসার গিয়েছিলেন। কিন্তু মাছ শিকারিরা উপজেলা
চেয়ারম্যানের কাছে যান। উপজেলা চেয়ারম্যান আমাদের ডেকে বলেছেন আগামী বছর
থেকে তাঁরা (অবৈধ বেড়ার মালিকরা) মাছ মারবে না।’

অবৈধ বেড়ার (খাঁটি) মালিক মহদিকোনা গ্রামের আব্দুল মনাফ বলেন ‘মাছ ধরার
লাগি বেড়া দিছি। এখন সিজন (মাছ ধরার সময়)। নোটিশ পাইছি। পরে উপজেলা
চেয়ারম্যানকে সাথে লইয়া সমাধান করছি। যাতে মাছ ধরতে কেউ বাধা না দেইন।’

এ ব্যাপারে সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবু ইউসুফ বেড়া দিয়ে মাছ শিকারের
কারণে রাস্তা ভাঙার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে আমার আগের
স্যারসহ অভিযানে যাই। কিন্তু রাজনৈতিক বাধার কারণে বেড়া অপসারণ করা সম্ভব
হয়নি। স্যারও বদলি হয়ে যান।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহেল মাহমুদ বলেন, ‘ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা
করা হয়েছে। অভিযানে মৎস্য কর্মকর্তা ও পুলিশ ছিলো। অবৈধ বেড়া উচ্ছেদ
হয়েছে মর্মে মৎস্য কর্মকর্তা প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে কেউ যদি
অবৈধ বেড়া তৎপরতা চালায়, তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর বলেন, ‘বড়লেখার মানুষ ৮ মাস
পানিবন্দি ছিলো। অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এপ্রিল মাসে। প্রশাসন তখন কোন
পদক্ষেপ নেয়নি। পানি বেশি থাকতে রাস্তা হয়তো ভেঙেছে। এখন নদীতে পানি কমায়
মাছ ধরতেছে। এরা গরীব মানুষ। তাই আমি বলেছি এ বছর অন্তত তাঁরা যেন মাছ
ধারার সুযোগ পায়। আগামী বছর যাতে প্রথম থেকে প্রশাসন পদক্ষেপ নেয়। এতে
আমরা সহযোগিতা করবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451