সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত হিজবুত তাহরীরের ২ সদস্য গ্রেপ্তার বগুড়ায় আইন কর্মকর্তা নিয়োগ বিএনপি-জামায়াতপন্থি ১০৭ জন অতি বৃষ্টির কারণে লালমনিহাট জেলায় বন্যা নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত বগুড়ায় ট্রাক পরিবহনের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার আত্মসাৎ ও মামলা টিএমএসএস সদস্যদের (RAISE) প্রকল্পের উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দীর্ঘ ১৩ বছর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চাকুরী ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আশুলিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিত্যক্ত চুল পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে ভাগ্য বোনার চেষ্টা আদিতমারীর নারীদের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর হলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম

আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি গ্রামে, শহরে উল্টো

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭
  • ৩৬০ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী গ্রামে আয়ের তুলনায় ব্যয় অনেক বেশি। মূলত এই কারণেই ঢাকামুখী জনস্রোত থামানো যাচ্ছে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আর গবেষণা বলছে, ঢাকার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য নেওয়া উদ্যোগের ফলাফল হতাশাব্যঞ্জক।

ভিটাবাড়ি ছেড়ে মানুষ সেই ঢাকা শহরের দিকে আসছে, যে ঢাকা আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বসবাসের অযোগ্য শহর হিসাবে বিশ্বে চতুর্থ, নদীদূষণের দিকে থেকে প্রথম, বায়ুদূষণের দিক থেকে এশিয়ায় দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে মানসিক চাপের শহর হিসাবে বিশ্বে সপ্তম। তারপরও ঢাকামুখী জনস্রোত একটুও কমেনি।

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘এখন লেটেস্ট (সর্বশেষ) যে সার্ভে (জরিপ) হয়েছে, ঢাকার ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা) করার জন্য তাতে বলা হচ্ছে ৭ থেকে ৮ শতাংশ হারে মানুষের আগমন ঘটছে। যদি দেড় কোটি মানুষ হয়, তাহলে বুঝতেই পারছেন প্রতিবছর আমরা প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষকে ঢাকা অভিমুখী করছি।’

বসবাসের যতই অযোগ্য হোক ঢাকায় আসা মানুষ ভালোভাবেই জানেন উন্নয়ন বৈষম্যের কারণে ঢাকায় এমন কিছু সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা গ্রামে, জেলা শহরে এমনকি বিভাগীয় শহরেও পাওয়া যায় না।

ঢাকার এক রিকশাচালক জানান, তাঁর বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। সেখানে রিকশা চালিয়ে একদিনে তিনি ১৫০ টাকা উপার্জন করেন। আর ঢাকায় তাঁর উপার্জন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যও বলছে, গ্রামে আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি আর শহরে ব্যয়ের তুলনায় আয় বেশি। তাহলে কেন মানুষ ঢাকায় আসবে না।

এ ছাড়া বৃহত্তর রংপুরের মানুষ কেন ঢাকায় বেশি আসে তারও জবাব পাওয়া যায় পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্টে। এর তথ্য অনুযায়ী, রংপুর বিভাগে দরিদ্রতার হার সবচেয়ে বেশি, যেখানে ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ মানুষই দরিদ্র।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র গবেষক মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘আট ভাগের এক ভাগ, ১৩ শতাংশ লোকজন শুধু আমরা সিটিতেই বসবাস করছি। যেখানেই বলা হয়, জিডিপির ওয়ান-থার্ড, প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ ঢাকাতেই জেনারেটেড (সৃষ্টি) হয়। এটা একটা সুস্থ লক্ষণ না। আমাদের বিকেন্দ্রীকরণের দিকে যেতে হবে।’

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর হিসেবে ঢাকা এখন সারা দুনিয়ার কাছে বিস্ময় যে কী করে এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ বাস করে। জনসংখ্যার চাপ কমাতে ঢাকায় সব সুযোগ সৃষ্টি না করে বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দেওয়া হয় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সেটাও কি সম্ভব হচ্ছে। এ ব্যাপারে উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা একটি গবেষণা চালায়। যেখানে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের মোট ১২টি ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) নিয়ে কাজ করা হয়।

বিআইডিএসের গবেষক ইউনুছ বলেন, “আমরা ইপিজেডের ওপর গবেষণা করেছি, নয়টি ইপিজেড, সবকিছুতে। এটায় একটা জিনিস প্রকট হয়ে এসেছে এই যে, নীতির বিকেন্দ্রীকরণে যদি উৎসাহিত না করেন, তাহলে যে তা হয় না। সেটা আপনি দেখবেন চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং ঢাকা ইপিজেডে উদ্যোক্তরা প্লটের জন্য যারপরনাই প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে; ‘একটা প্লট খালি হচ্ছে এটা আমি নেব’। অথচ আদমজীতে প্লট খালি আছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে কুমিল্লায় প্লট খালি আছে। সেখানে উদ্যোক্তারা যেতে চায় না।”

মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকায় এখন সবচেয়ে দ্রুত জনসংখ্যা বাড়ছে। পরিস্থিতি এমন যে ঢাকায় ভুটানের সমান জনসংখ্যা হতে এক বছরও লাগে না। আবার জনবহুল সিঙ্গাপুর শহরের সমান জনসংখ্যা হতে সাত-আট বছরই যথেষ্ট। ঢাকা ও তার আশপাশের জনসংখ্যা, যা এখন প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ, তা দুটি কোটি দু-তিন বছরেই ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘উন্নয়নকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা কিন্তু প্রকল্পগুলো করছি। কিন্তু আসলে হচ্ছেটা উল্টো। কিন্তু উন্নয়নকে না নিয়ে, বরং স্থানীয় উন্নয়নকে শোষণ করে ঢাকা অভিমুখী করছি। এটা আমার কাছে, আমাদের দেশে যে শোষণ অর্থনীতি গড়ে উঠেছে ব্রিটিশ সময় থেকে শুরু করে, পাকিস্তান আমাদের শোষণ করেছে। এখন ঢাকা শোষণ করছে সারা বাংলাদেশকে। আপনি যদি সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেখেন এটি সাংঘাতিকভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, সমতার ভিত্তিতে বিন্যস্ততার যে স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধ করেছি তার বিপরীতধর্মী একটা রাজনৈতিক দর্শন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451