স্টাফ রিপোর্টার ঃ
ঢাকার সাভারের তিতাস গ্যাস সংযোগের বিতরণের পরিমান ৫৬-থেকে ৬০ কিলোমিটার, গত ১০ মাসে প্রায় ২৫
কিলোমিটার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অফিস সুত্রে জানা গেছে, বৈধ গ্রাহক সংখ্যা ৭০০০০/
চুলার সংখ্যা ১,৬০০০০/১,৭০০০০।
জানা গেছে, সাভার উপজেলার আশুলিয়া পলাশবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় যেখানে-সেখানে গ্যাসের অবৈধ
সংযোগের কারণে প্রতি মাসে সরকারের মোটা অংকের টাকা লোকসান হচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। সুত্রে জানা
গেছে, প্রায় প্রতিটি এলাকায়ই এসব অবৈধ সংযোগের ছরাছড়ি,এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা
লোকসান হচ্ছে বলে অনেকেই জানান। স্থানীয়রা জানান, তিতাস গ্যাস কো¤পানীর সংশ্লিষ্ট লোকেরাই এক
একজনের সংযোগ দিতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে সংযোগ দেন আবার তারাই অভিযান চালিয়ে সেই
অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছেন! মনে হয় কথিত এ যেন সরিাষার মধ্যে ভুতের বসবাস। এসব অবৈধ সংযোগ
বিচ্ছিন্ন করার সময় বৈধ গ্যাহকদের গ্যাসের চুলায় গ্যাস না থাকাসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হন বলে
অনেকেই জানান।
সরেজমিনে গিয়ে গত এক মাসে জানা গেছে, ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়ার পলাশবাড়ীসহ বিভিন্ন
এলাকায় তিতাস গ্যাসের হাজার হাজার অবৈধ সংযোগ দিয়ে সংশ্লিষ্ট একটি মহল লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে
নিচ্ছে। উল্লেখ্য গত ০৭/১১/২০১৭ ইং তারিখে দিবাগত মধ্যরাত অনুমান ১২ টার দিকে পলাশবাড়ির পশ্চিম পাড়া
মসজিদের পাশে রাস্তার উপরে হঠাৎ ধাউ ধাউ করে আগুন জ¦লতে দেখতে পায় এলাকাবাসী। এ সময় আগুন আগুন বলে
চিৎকারে মুহুর্তের মধ্যেই অসংখ্য মানুষের ভীড় জমায় এবং পথের মধ্যে থাকা বালু ও মাটি চাপা দিয়ে আগুন
পুরোপুরি ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন উপস্থিত লোকজন। এরপর সেখান থেকে পুনরায় বালু ও মাটি সরিয়ে এলাকাবাসী
তখন গ্যাসের একটি অবৈধ সংযোগের অসমাপ্ত পাইপের খোলা মুখ দেখতে পায়। ওই এলাকাবাসী বিষয়টি সাভার
তিতাস গ্যাস অফিসের কর্মকর্তাদের অবগত করলে তারা অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন।
উক্ত ঘটনাস্থলে হামীম গ্রুপের কর্মরত মোঃ আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রশিদ এর বাড়ী পর্যন্ত গ্যাসের অবৈধ সংযোগের
প্রস্তুতি ফিটিং পাইপ উদ্ধার করা হয় এবং উভয় ব্যক্তিদ্বয়ের বাড়িতে দুইটি ফিটিং রাইজারও পাওয়া যায়। এ অগ্নি
দূর্ঘটনা গাঁর উপক্রমে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী মোঃ আব্দুল্লাহ এর উপর চড়াও হলে মুহুর্তের মধ্যে তারা নিরব ও ঠান্ডা হয়ে
যায়।
বিশেষ করে সংবাদকর্মীগণ এ সময় উপস্থিত হলে অবৈধ গ্যাস সংযোগের ব্যাপারে মুঠো ফোনে আব্দুর রশিদ এর
কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার নিজের বাড়ীতে এবং আব্দুল্লাহর বাড়ীতে গ্যাসের প্রয়োজন বিধায়
দুইজনের সমপরিমান অর্থ সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ করেছি গ্যাস পাওয়ার আশায়। ঠিকাদার সবুজকে ১ লাখ ২০ হাজার
টাকা দিয়েছি এবং এলাকার কিছু লোককে বাদ বাকী টাকা হাদিয়া দিতে হয়েছে বলে তিনি জানান। কারণ
গ্যাস সংযোগ নেওয়ার সময় কোন প্রকার সমস্যা হলে সেগুলো তারা ম্যানেজ করে নিবেন বলে তিনি জানান। এ
দিকে হামীম গ্রƒপের দায়িত্বরত কর্মকর্তা পলাশবাড়ীর বাসিন্দা মোঃ আব্দুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি
সাংবাদিকদেরকে দায়সাড়া জবাব দেন।
অন্যদিকে অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার মূল হোতা এবং সারা আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ গ্যাস
সংযোগ দানকারী নামধারী ঠিকাদার সবুজ এর কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকর্মীদেরকে
জানায়, যে সকল কাজ আমি অবৈধ ভাবে করে থাকি-সেই কাজের অর্থের এক অংশ গ্যাস কর্মকর্তাদের দিতে হয়।
তিনি বলেন, তাদের সাথে যোগাযোগ করে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেই কাজ করি। আবার সময়মত অভিযোগ
করে ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ে সেগুলো বিচ্ছিন্ন করার সময়ও কর্মকর্তাদের সাথে তিনি থাকেন বলে জানান। এ
ব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়, সাভার, আশুলিয়া, পলাশবাড়ী, ইউনিক, জামগড়া, গাজিরচট, ফ্যান্টাসী কিংডমের
পিছনে, সরকার মার্কেট, ভাদাইল, নসিংহপুর, ঘোষবাঘ, জিরাবো ও পুরাতন আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায়
তিতাস গ্যাস এর হাজার হাজার অবৈধ সংযোগ রয়েছে।
উক্ত ব্যাপারে তিতাস গ্যাস কোম্পানীর সাভার অফিসের জোনাল ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমান জানান,
অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর ৫৬-৬০কিলোমিটার সংযোগ বিতরণ করা
হয়েছে। গত ১০ মাসে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আমরা প্রায় ২৫ কিলোমিটার অবৈধ সংযোগ
বিচ্ছি করেছি।