বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কবে হবে জাতীয় নির্বাচন, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ মোরেলগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলার উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক ও কর্মচারী দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কখন, যা বললেন মির্জা ফখরুল গুম-খুনে আর জড়াবে না র‍্যাব : মহাপরিচালক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম সমর্থন করে না ভারতের মোদি সরকার সোনারগাঁয়ে দুটি চুনা কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন পাঁচবিবিতে জনবল সংকট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ক্যারিবিয়ান জয়ের পর তাসকিন-তাইজুল যা বললেন

মাটিতে পড়ে আছেন যিনি, তিনি কীভাবে টেনে নামাবেন? সংসদে প্রধানমন্ত্রী

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৭
  • ১৭২ বার পড়া হয়েছে
মাটিতে পড়ে আছেন, তিনি কীভাবে টেনে নামাবেন?

বাসস,

অনলাইন ডেস্কঃ 

বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং পাঁচ বছরের দুঃশাসনের জন্য তারা জনগণের ভোট পাবে না।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশম জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘জনগণ তাদের ভোট দিয়ে আবার আপদ টেনে নিয়ে আসবে এবং মানুষের জীবনকে আবার দুর্বিষহ করে তুলবে? মোটেই না। আমার এ দেশের মানুষের প্রতি বিশ্বাস আছে অন্তত যাদের বিবেক আছে তারা এদের কোনোদিনই ভোট দেবে না।’ তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কাজেই ওই স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। আর বড় বড় কথা বলেও লাভ নেই। মানুষ শান্তি চায়, মানুষ উন্নতি চায়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘মানুষ এটা বুঝতে পেরেছে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের মানুষের সত্যিকার উন্নতি হয় এবং উন্নতি হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের আরেকটি দল যারা নির্বাচনে আসে নাই। রাস্তায় রাস্তায় তারা চিৎকার করে বেড়াচ্ছে আমাদের সরকারকে তারা নাকি একেবারে টেনেই নামাবে।’ তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য এবং সকল সরকারের সময়ে মন্ত্রী থাকার কৃতিত্বের অধিকারী জনৈক রাজনৈতিক নেতার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এমন এক নেতার মুখ থেকে কথাটা আসলো তাঁর ভদ্রলোকের নাম আমি নিতে চাই না। কিন্তু তার চরিত্রটা কী? ছাত্রজীবনে করেছেন এক রাজনীতি, পরে নানা সময় নানা রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছেন। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এবং রাষ্ট্রপতি থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে মন্ত্রী হলেন। এর পর থেকে যখনই যে দল ক্ষমতায় সে মন্ত্রী থাকে। তাঁর একটা বড় গুণ যখনই যে সরকারে তখনই তিনি মন্ত্রী।’

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘সেই রাজনীতিবিদ একজন বিদেশির বাড়ি দখল করে রেখেছিলেন এবং পরে কোর্টে মামলা করে সে বাড়িও হারালেন। সেখানেও প্রতারণা-মৃত ব্যক্তির নামের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে নিজের ভাইয়ের নামে বাড়ি করে নিয়েছিলেন। তিনি আবার ঘোষণা দেন আমাদের সরকারকে নাকি তিনি ক্ষমতা থেকে টেনেই নামাবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, যিনি মাটিতে এমনিতেই পড়ে আছেন, তিনি আবার কাকে কীভাবে টেনে নামাবেন। ওই নেতার নেত্রী (খালেদা জিয়া) অবশ্য ২০১৫ সালে ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগকে সরকার থেকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। ৯২ দিন মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। ব্যক্তিগত এবং সরকারি গাড়ি, বাস, সিএনজি, লঞ্চ, ট্রেন পুড়িয়েছেন। এখনো পোড়া ঘা নিয়ে মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৫ সালে ৫৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারকে পর্যন্ত হত্যা করেছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমরা করেছি, তারা পুড়িয়ে দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারকে হত্যা করেছে। ২৭ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র সরকার উৎখাত করবে এবং ক্ষমতায় যাবে এই লোভে তারা জনগণের যে ক্ষতিটা করল এরপর জনগণ যখন তাদের বাধা দিল সেই বাধায় কোর্টে গিয়ে মামলার হাজিরা দিয়ে ঘরে ফিরে গেল। সরকার তো আর উৎখাত করতে পারল না। তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, যারা এভাবে মানুষ খুন করেছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এফবিআইর (যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা) তদন্তে যে নেত্রীর ছেলেদের মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, যে নেত্রী নিজে এতিমদের টাকা মেরে খেয়েছেন। দুর্নীতিতে যাদের আগামাথা মোড়া ছিল। যারা দেশে বাংলা ভাইসহ জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সারা দেশে যারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল, মানুষ ঘরে ঘুমাতে পারেনি, নিজের ঘরে থাকতে পারেনি। রাতারাতি বসতবাড়ি কেড়ে নিয়ে সেখানে পুকুর কেটেছে, শাহ এ এম এস কিবরিয়া এমপি, আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপিকে হত্যা করেছে, আমার ওপর গ্রেনেড হামলা করেছে, সেখানে আইভী রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। সরকারপ্রধান বলেন, যাদের ব্যবসাটা হচ্ছে চোরাচালান, অস্ত্র চোরাচালান করা, যাদের ১০ ট্রাক অস্ত্র পর্যন্ত ধরা পড়েছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাদের এতগুণ, জনগণ তাদের ভোট দেবে কেন? তারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে কীভাবে?’ তিনি বলেন, যারা জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, তাদের সময়ে পাঁচবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে- ওই দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যাকারীদের জনগণ কেন ভোট দেবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ তাদের ভোট দিয়ে আপদ টেনে নিয়ে আসবে এবং মানুষের জীবনকে আবার দুর্বিষহ করে তুলবে? মোটেই না। আমার এ দেশের মানুষের প্রতি বিশ্বাস আছে অন্তত যাদের বিবেক আছে তারা এদের কোনোদিনই ভোট দেবে না। কাজেই ওই স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। আর বড় বড় কথা বলেও লাভ নেই। মানুষ শান্তি চায়, মানুষ উন্নতি চায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ এটা বুঝতে পেরেছে যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের মানুষের সত্যিকার উন্নতি হয় এবং উন্নতি হবে। কারণ মানুষের এখন জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। তারা এখন সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়। প্রত্যেকের সুন্দরভাবে জীবনযাপনের সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি।’

শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন আর অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যায় না। এখন পরীক্ষায়ও পাস করে ৮০ ভাগের কাছাকাছি। শিক্ষাঙ্গনের অনেক গুণগত পরিবর্তন তাঁর সরকার করতে সক্ষম হয়েছে।

দেশে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশের কোনো বিপর্যয় ডেকে আনবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র অনেক আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এবং এই পরমণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্যটা যে রাশিয়া নিয়ে যাবে সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তিও হয়ে গেছে। কাজেই এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘পরিবেশের যদি ক্ষতি হতো তাহলে আমরা এটা করতাম না। আর পরিবেশের ক্ষতি যেন না হয়, সে জন্যই সুপার ক্রিটিক্যাল পাওয়ার প্ল্যান্ট হিসেবে দেশের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে।’ দিনাজপুরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে এবং যেটি খুব উন্নত না হলেও পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, সেখানে প্রচুর ফসল হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

দেশে একশ্রেণির মানুষ রয়েছেন যাদের কাজ কেবল সমালোচনা ও খুঁত খুঁজে বের করা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুই ভালো লাগে না–এ শ্রেণির মানুষ আছে। এটা থাকবে। এটা তাদের ব্যবসা। তাদের কাজ না না করা।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারে আছেন এবং আজকে দুপুরে মিয়ানমারের সরকারের সঙ্গে একটা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছি। তারা তাদের এই নাগরিকদের যাতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। তারা স্বীকার করেছে তারা ফিরিয়ে নেবে। এমওইউ আমরা সই করেছি।’ তিনি বলেন, “জাতির পিতার যে পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’- সেটা আমরা বজায় রেখে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451