মোঃ আব্দুর রহিম, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের
বড়লেখা-বিয়ানীবাজার সিএন্ডবি সড়কের বারইগ্রাম বাজারে সরকারী এবং সড়ক ও
জনপথ বিভাগের ভুমি জবরদখল ও খাল ভরাটের হিড়িক পড়েছে। ইতোপুর্বে বেহাত
হয়েছে অন্তত ২ কোটি টাকার সরকারী ভুমি। পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে কতিপয়
প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনের নাকের ডগায় এবার পাহাড় টিলার মাটি কেটে
নিচু জমি ভরাট করে প্লট আকারে চড়া দামে বিক্রি করছে। এতে একদিকে ধংস
হচ্ছে টিলা, অন্যদিকে সরকারী ভুমি বেদখল ও বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের
পথ বন্ধ হয়ে তীব্র জলাবব্ধতা দেখা দিবে। এতে এ অঞ্চলের জনসাধারণকে
পোহাতে হবে চরম দুর্ভোগ।
সরেজমিন অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বড়লেখা-বারইগ্রাম-সিলেট সিএন্ডবি
আঞ্চলিক মহা-সড়কের সোনাই নদী তীরবর্তী বারইগ্রাম বাজারে আব্দুল্লাহপুর
মৌজায় ৬৬৩ ও ৬৬৯ দাগে শত্র“ সম্পত্তি গেজেটভুক্ত প্রায় অর্ধকোটি টাকা
মুল্যের ১০ শতাংশ ভুমি জবরদখল করেছেন জনৈক নিজামুল হক নাজিম। এ ভুমির
ওপর বর্তমানে তিনি পাকা স্থাপনা তৈরীর প্রস্তুতি চালাচ্ছেন। তার ব্যক্তি
মালিকানাধীন ভুমির সামনের সিএন্ডবি’র খাল ভরাট করায় বৃষ্টি হলেই
বারইগ্রাম বাজারের একাংশ ডুবে যায়। নিজের মালিকানাধীন ভুমির পাশের ৩
শতাংশ ভুমি গত বছর জনৈক ময়নুল ইসলামের নিকট তিনি বিক্রি করেন। সম্প্রতি
ময়নুল ইসলাম টিলার মাটি দিয়ে ক্রয়কৃত ভুমির সম্মুখের সিএন্ডবি’র গভীর
নালা ভরাট করেছেন। এতে বর্ষাকালে বারইগ্রাম বাজারের উত্তরপূর্বাংশ তলিয়ে
যাওয়ার আশংকা।
এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা জানান, বারইগ্রাম মৌজায় আরএস ৭১৮, ৭২০ ও ৭২৩ নং
দাগে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নামে রেকর্ডভুৃক্ত ভিটা ও খাল রকম ৮৩ শতাংশ ভুমি
রয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা সরকারী নিচু ও খাল শ্রেণীর মূল্যবান এসব
ভুমির বেশিরভাগ জবরদখল করেছেন। অবৈধভাবে টিলা কেটে মাটি ভরাট করে
বর্তমানে তারা প্লট আকারে বিক্রি করছেন বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। এছাড়া
প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অনেকে সড়কের উভয় পাশের মূল্যবান সরকারী ভুমিতে
নানা অবৈধ স্থাপনা তৈরী করে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সড়ক
সংকীর্ণ হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।
নিজামুল হক নাজিম সরকারী ভুমি জবরদখলের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, প্রায়
৬ মাস পুর্বে বারইগ্রাম বাজারে আবদুল্লাহপুর মৌজায় বিভিন্ন দাগে ৫০ শতাংশ
ভুমি তিনি এজাজ আহমদ চৌধুরীর নিকট থেকে ক্রয় করেন। গেজেটভুক্ত ৬৬৩ ও ৬৬৯
দাগের ১০ শতাংশ ভুমি ‘খ’ খতিয়ানভুক্ত। এ ভুমি শৈলেন্দ্র কুমার দেবের
বিনিময় দলিলে আব্দুর রূপ চৌধুরী ক্রয় করেন। পর্যায়ক্রমে ক্রয়সুত্রে তিনিও
(নিজামুল হক নাজিম) উক্ত ভুমির মালিক।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিয়ানীবাজার সেকশন অফিসার (এসও) একেএম জাকারিয়া জানান,
বারইগ্রাম বাজারের বেদখল হওয়া সওজ এর সকল ভুমি দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে জবর
দখলকারীদের নামের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। খুব শিগগির উচ্ছেদ অভিযান
চালানো হবে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সৈয়দ আমিনুর রহমান জানান, টিলা
কাটা এবং নিচু জমিতে টিলার মাটি ভরাট করা দু’টি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সরকারী ভুমি জবর দখল ও পরিবেশ আইন লঙনের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে
বিয়ানীবাজারের ইউএনওকে নির্দেশ দিয়েছেন।