রাজধানীর বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকায় উঠেছে। দু’দিনের ব্যবধানে এর দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়েছে।
আমদানি পেঁয়াজের বেশিরভাগই আসে ভারত থেকে। ভারতে দাম বৃদ্ধির ফলে আমদানি করা পেঁয়াজের দরও বেড়ে চলেছে। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৫ টাকা হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পেঁয়াজের দর তিনগুণ বেড়েছে।
ভরা মৌসুমে কাঁচা মরিচের দামও বেশি; শুক্রবার প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। খুচরা আড়াইশ’ গ্রাম যারা কিনেছেন তারা ৩৫-৪০ টাকার নিচে কিনতে পারেননি। গত সপ্তাহেও সেটা ছিল ২০-২৫ টাকা।
বাজারে শীতকালীন সবজি ও মাছের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কম দামে মিলছে এসব পণ্য। একই কারণে মাংস, মুরগি ও ডিমের চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে।
এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এসেছে নতুন পেঁয়াজের কলি। এখন এই পেঁয়াজের কলি প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরের এ সময়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ছিল ৩৫-৪০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা। যথাক্রমে এখন তা ১১০-১২০ টাকা ও ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দু’দিন আগেও দেশি পেঁয়াজ ৮৫-৯৫ টাকা ও আমদানি পেঁয়াজ ৭৫-৮৫ টাকায় বিক্রি হয়।
গত নভেম্বরে ভারত পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৮৫০ ডলার বেঁধে দেওয়ায় তখন এক দফা দাম বেড়ে ৬০ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকায় পৌঁছে। এরপর দেশি পেঁয়াজের দর বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজের দর আরও বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সবুজ মিয়া, আমদানি পর্যায়ে ভারতীয় পেঁয়াজের দর বেশি পড়ছে। এ কারণে দাম বেড়েছে। তবে তা দেশি পেঁয়াজের মতো এতটা বেশি বাড়েনি। ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে।
দেশি পেঁয়াজের দর বৃদ্ধির বিষয়ে মো. আবদুল মমিন মণ্ডল বলেন, ‘পাবনার মোকামে তেমন পেঁয়াজ নেই। নতুন পেঁয়াজ আসতে দেরি হচ্ছে। এ কারণে শেষ মৌসুমে যেমন খুশি তেমন দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, গত বুধবার পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা ছিল; শুক্রবার তা ১১০ টাকায় বিক্রি করেছেন। মোকাম থেকে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও আড়তে অনেক ক্রেতা রয়েছেন। ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় দাম দিন দিন বাড়ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আরও দু’এক সপ্তাহ পরে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। নতুন পেঁয়াজ আসতে দেরি হলে দাম আরও বাড়বে বলে মনে করেন তারা। তবে এবার বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ আবাদ ব্যাহত হয়েছে। অন্যান্য বছরে এ সময়ে বাজারে মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজে সয়লাব হয়ে যায়।
বাজারে সবজির সরবরাহ বৃদ্ধিতে এখন আর তেমন চড়া দাম নেই। আগের সপ্তাহে বেশিরভাগ সবজি ৪০-৫০ টাকা ছিল। এখন তা ৩০-৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু ৫০ টাকা থেকে কমে এখন ৩০ টাকা হয়েছে। কাঁচা টমেটো মিলছে ২০ টাকায়। ৩০ টাকা দরের মুলা এখন ২০ টাকা। তবে পাকা টমেটো এখনও ১২০-১৩০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিটি ফুলকপি ও বাধাকপি ২০-২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
মাছ ও সবজির দাম কম থাকায় মাংস ও ডিমের চাহিদা কমেছে। এতে দাম কমে প্রতি ডজন ডিম এখন ৭০ টাকায় মিলছে। প্রতি হালি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ২৫-২৭ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে এখন ১১০-১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
রাজধানীর বাজারে গরুর মাংসের দামও কমেছে। প্রতি কেজি ৫০০ টাকা থেকে কমে এখন ৪৫০-৪৭০ টাকায় বিক্রি হয়। সুপারশপও দাম কমিয়ে অফার দিচ্ছে। ‘স্বপ্ন সুপারশপে’ দুই কেজি কিনলে প্রতি কেজি ৪৪৯ টাকা দরে বিক্রির অফার দিয়েছে। খাসির মাংস মিলছে ৭০০ টাকা কেজিতে।