বাংলার প্রতিদিনঃ-
টানা ১৫ দিন অনশনের পর উপাচার্যের আশ্বাসে পানি পান করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে অনশনে বসা ওয়ালিদ আশরাফ।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান পানি পান করিয়ে ওয়ালিদ আশরাফের অনশন ভাঙান। গত ২৫ নভেম্বর বিকেল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন প্রাঙ্গণে অনশন পালন করে আসছিলেন ঢাবির এই শিক্ষার্থী।
অনশন ভাঙার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওয়ালিদ আশরাফ বলেন, ‘যেহেতু উপাচার্য স্যার এসেছেন তাঁর সম্মানে আমি অনশন ভেঙেছি। অবস্থান অনশনও করব না। তবে আমি আশা করছিলাম, স্যার নির্দিষ্ট তারিখ দিবেন। কিন্তু তিনি দেননি। তবে আমি ডাকসুর জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘ওয়ালিদ আশরাফের অনশনটিকে আমরা মানবিক বিষয় থেকে দেখছি। তাঁর মা-বাবা আমাদের কাছে কান্নাকাটি করেছেন।’
অনশন ভাঙার আগে উপাচার্যের কাছে ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা চান ওয়ালিদ আশরাফ। তখন উপাচার্য বলেন, ২৭ বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার সেই জঞ্জাল দূর করতে অনেক সময় লাগবে এবং হঠকারীভাবে কিছু করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, ডাকসু নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আর এগুলো পরিকল্পিতভাবে করতে হবে।
হাইকোর্টের সব নীতি বাস্তবায়ন করারও প্রতিশ্রুতি দেন উপাচার্য।
ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে গত ২৫ নভেম্বর অনশনে বসেন ওয়ালিদ আশরাফ। এই সময়ে তিনি শুধু পানি আর স্যালাইন নিয়ে বেঁচে ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে তিনবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওয়ালিদ আশরাফের এই অনশনে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো প্রথম সমর্থন দেয়। পরে তারা এই আন্দোলনের সমর্থনে সাংবাদিক সম্মেলন, মিছিল ও মানববন্ধন করে। এরপর ছাত্রলীগ, ছাত্রদলও তাদের সমর্থন জানায়।
আজ অনশন ভাঙার পরে ওয়ালিদ আশরাফের মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজন এসে তাঁকে বাসায় নিয়ে যান।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যা্পক ড. এ কে এম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ওয়ালিদ আশরাফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের ২০১১-২০১২ সেশনের সান্ধ্যকালীন কোর্সের মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের রাশিয়ান ভাষার শিক্ষার্থী।