অনলাইন ডেস্কঃ-
রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন তিন জঙ্গির একজন আবদুস সামাদ নব্য জেএমবির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তামিম চৌধুরীর ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ ছিল বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সিটিটিসি বলছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন সময় নব্য জেএমবির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা গ্রেপ্তার ও নিহত হলে এই সামাদের নেতৃত্বেই জঙ্গি সংগঠনটি সংগঠিত হয়।
গকতাল বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুস সামাদ ওরফে আরিফ মামু ওরফে আশিক, তার শ্বশুর জিয়াদুল ইসলাম এবং মো. আজিজুল ইসলাম ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে শিশিরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
ব্রিফিংয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, তামিম চৌধুরী ও সামাদ কল্যাণপুর ও মিরপুর এলাকায় প্রায় ডজনখানেক জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প খুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। হলি আর্টিজান হামলার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর সামাদই সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
তিনি বলেন, আজিজুল ইসলাম মেহেদী পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুই বছর ধরে জঙ্গি কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছে। জিহাদি প্রশিক্ষণও সে নিয়েছে। আর সামাদের শ্বশুর জিয়াদুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নব্য জেএমবির জন্য অস্ত্র-বিস্ফোরক ও ডেটোনেটর সংগ্রহের পাশাপাশি সংরক্ষণ ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করতেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, দিনাজপুরের সামাদ ২০০২ সালে দাওরাহ হাদিস এবং ২০১১ সালে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। তার মধ্যেই ২০১০ সালে তিনি জেএমবিতে যোগ দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের বরাতে মনিরুল বলেন, ২০১৪ সালে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে মিলে ‘জুনদ আল তাওহীদ আল খিলাফাই’ নামে একটি সংগঠন গড়েন সামাদ। তামিম ছিলেন সংগঠনটির প্রধান, আর সামাদ ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’।
বোমা তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে ‘পারদর্শী’ সামাদ সংগঠনের জন্য সদস্য ও অর্থ সংগ্রহের পাশাপাশি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতেন বলে মনিরুলের দাবি।
তিনি বলেন, অস্ত্র চালনা ও গ্রেনেড ব্যবহারের বিষয়ে সংগঠনের নবীন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন সামাদ। নব্য জেএমবির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার ও নিহত হওয়ার পর তার নেতৃত্বে সংগঠনটির কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ হয়।
উল্লেখ্য, গতকালের গ্রেপ্তার-অভিযানে তিনজনের কাছ থেকে একটি ৯ এমএম পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও ২০০ ডেটোনেটর উদ্ধার করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।