হেলাল শেখ:
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা
বিরোধী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গাজীপুর জেলার বড়বাড়ি বাসস্ট্যান্ডে উক্ত আলোচনা
সভার আয়োজন করে গাজীপুর মহানগর বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট।
দৈনিক বজ্রশক্তির গাজীপুর জেলার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মো. নাহিদ হোসেন এর
সঞ্চালনায় এবং দৈনিক বজ্রশক্তির ঢাকা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান মো. আতিয়ারুর
ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য আলহাজ্ব আকরাম হোসেন সরকার।
সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির
সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহাবুব আলম। তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস হচ্ছে
বিজয়ের মাস, গৌরবের মাস। প্রতি বছর এই মাসটি স্মরণ করিয়ে দেয় দেশের
জন্য মানুষের জন্য আমাদের পূর্বপুরুষরা কী অকল্পনীয় ত্যাগ স্বীকার করে বিজয়
ছিনিয়ে এনেছিলেন। তাঁদের সেই আত্মত্যাগের বিনিময়েই আমরা আজ
স্বাধীন দেশের নাগরিক পরিচয় দিতে পারছি। তাঁরা যদি সেদিন নিজেদের মধ্যকার
সমস্ত মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারতেন তাহলে আমাদের ইতিহাস হয়তো
গৌরবের হতো না, শোচনীয় হতো।’
কিন্তু আজ ২০১৭ সালে এসে আমরা দেখছি, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে আজ
অবধি আমাদের সামাজিক অপরাধ ধাঁই ধাঁই করে বেড়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে
খুন, ধর্ষণ, ব্যাভিচার প্রতারণা, জালিয়াতি। নারী নির্যাতন, শ্লীলতাহানি,
ধর্ষণ, হত্যা ইত্যাদি অপরাধ শত আইন করেও ঠেকানো যাচ্ছে না। রাষ্ট্রের কোটি
কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অন্যদিকে রাজনৈতিক কোন্দল যেন এক চিরাচরিত নিয়ম
হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার পর আমাদের গত ৪৬ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাস
জাতির মধ্যে অনৈক্য, রক্তারক্তি, হানাহানি আর ক্ষমতার কামড়াকামড়ির ইতিহাস।
গণতন্ত্রের নামে, সমাজতন্ত্রের নামে এক জাতিবিনাশী খেলা চলছে।
এরই মধ্যে নতুন এক বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘জঙ্গিবাদ’। এই জঙ্গিবাদ
যেখানেই গিয়েছে, সা¤্রাজ্যবাদও সেখানে গিয়েছে এবং কিছুকালের মধ্যেই
সেই দেশকে গণকবর বানিয়ে ছেড়েছে। সিরিয়া, লিবিয়ার শুরুটা কিন্তু এভাবেই
হয়েছিল, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসবাদের অনুপ্রবেশ,
অতঃপর সাম্রাজ্যবাদীদের রঙ্গমঞ্চ হয়ে ওঠা।’
সবশেষে তিনি বলেন, ‘এমতাবস্থায় আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক থেকে শুরু
করে সুশীল সমাজ, নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহলসহ সাধারণ মানুষ পর্যন্ত
প্রত্যেককে উপলব্ধি করতে হবে যে, ১৯৭১ এর বাস্তবতা আর ২০১৭ এর বাস্তবতা এক
নয়। তখনকার সঙ্কট আর আজকের সঙ্কটও এক নয়। আমাদের বর্তমান সঙ্কটকে যদি
আমরা উপলব্ধি করতে না পারি তাহলে একাত্তরের অর্জনকে ধরে রাখা আমাদের পক্ষে
সম্ভব হবে না। আমরা হেযবুত তওহীদ দীর্ঘ ২২ বছর যাবৎ এই কথাটিই সর্বমহলে
বলে আসছি।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য আলহাজ্ব আকরাম
হোসেন সরকার বলেন, ‘১৯৭১ সালে সাত কোটি বাঙালি যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়ে
দেশকে স্বাধীন করেছিল, ঠিক সেইভাবে আমাদের দেশের ষোল কোটি মানুষকে
ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে দেশকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। দেশকে
বাঁচাতে হলে দেশের উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষিত দূরদর্শী লিডারশিপ দরকার।’ এসময়
দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য ১৬ কোটি মানুষকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান
তিনি।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের
আহ্বায়ক সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বাদল, গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের
সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৈনিক বজ্রশক্তির গাজীপুর জেলার বুরে্যা প্রধান
মো. মোস্তাকিম খান, গাজীপুর মহানগর যুবমহিলালীগের নেত্রী ফাহমিদা
সুলতানা শিরিন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. কামাল শেখ।
মফস্বল সম্পাদক সাইফুল ইসলাম হেলাল শেখ