জাকির হোসেন, সখীপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল (৬৬) হত্যার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও
হত্যাকান্ডের কোন রহস্য উদ্ধসঢ়;ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ধসঢ়;ঘাটনসহ
খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে গত তিন বছরে চারবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও
সমাবেশ করেছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল। এরপরও হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ধসঢ়;ঘাটন
না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও নিহত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে ওষুধ
ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১১ মার্চ সকাল ১০ টায় স্থানীয়
মোখতার ফোয়ারা চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এবং মিছিল নিয়ে স্থানীয়
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও থানার সামনে বিক্ষোভ শেষে মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে
এসে সমাবেশ করে।
মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে টাঙ্গাইল থেকে যে ১০ জন ছাত্র
প্রথম মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তাঁদের মধ্যে মোস্তফা কামাল অন্যতম। ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর
দুপুরে সখীপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের প্রশিকা এলাকার বাসা থেকে বেড়িয়ে তিনি
নিখোঁজ হন। ৪ দিন পর ১ ডিসেম্বর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের গড়গোবিন্দপুর গ্রামের
একটি জঙ্গলের পাশ থেকে গলা ও দু’পায়ের রগ কাটা অবস্থায় পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ওই
দিন রাতে মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামালের ছেলে রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সখীপুর থানায়
হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিন বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এ হত্যার নূন্যতম
কোন রহস্যও উদ্ধসঢ়;ঘাটন করতে পারেনি। মামলা হওয়ার পর ওই সময় থানা পুলিশ কয়েকজনকে
ধরলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়। প্রায় বছর খানেক পর পুলিশ তদন্ত শেষে রহস্যের কোন কিনারা
না হওয়ায় মামলাটি জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) কাছে যায়। প্রায় দুই বছর ডিবি
পুলিশ তদন্ত চালায়। কিন্তু কোন রহস্য উদ্ধসঢ়;ঘাটন করতে করতে পারেনি। পরে গত নভেম্বরে
মামলাটি পুলিশের পৃথক তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)
কাছে হস্তান্তর করে।
মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জন তদন্ত কর্মকর্তা
বদল হয়েছে কিন্তু বাবার হত্যা রহস্য খুঁজে পায়নি কেউ।
সখীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার এমও গনি পুলিশের প্রতি
ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিজয়ের মাসটি আমরা অপেক্ষা করবো। তারপরও যদি পুলিশ ব্যর্থ
হয়, তাহলে মুক্তিযোদ্ধারা আরো বড় কর্মসূচি হাতে নেবে।
টাঙ্গাইলের পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম
ভূইয়া বলেন, মামলাটি দেড় মাস আগে পিবিআইতে এসেছে। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত
হওয়ায় অনেক গুলো ক্লু নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরেও আশা করছি এক মাসের মধ্যেই মামলাটির
রহস্য উদ্ধসঢ়;ঘাটন করা সম্ভব হবে।