হেলাল শেখ বিশেষ প্রতিনিধি ঃ
ঢাকার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর, কুমারখোদা এলাকায় বন বিভাগের জমির উদ্ধার নিয়ে
বসবাস স্থানীয়দের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বন বিভাগের কর্মীরা প্রায় ১২০ টি বাড়ী ও ঘর
ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সংঘর্ষের সময় শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে বন বিভাগের
কর্মকর্তারা। বাড়ী ভাংচুরের সময় মহিলা ও শিশুসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ২১/১২/১৭ইং, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম
সুজন ও “বাংলার প্রতিদিন” এর মফস্বল সম্পাদক সাইফুল ইসলাম হেলাল শেখ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির
সাধারণ সম্পাদক, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু এবং সাংবাদিক ফরহাদ
হোসেন ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। জানা গেছে, গত বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে
বলে স্থানীয়রা জানান। এ ঘটনায় ওই এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে বন বিভাগ
থেকে জানানো হয় পরিস্থিতি সামাল দিতে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ফাঁকা গুলি ছোড়েছেন, তাদের
গুলিতে কেউ আহত হননি বলে দাবি বন বিভাগের।
জানা গেছে, কোর্ট অব ওয়ার্ড আইনে মালিকানা ভুক্ত কিছু জমি এক বছরের জন্য লিজ নিয়ে প্রায়
দেড়শ কাঁচা-পাকা বাড়ী নির্মান করে বসবাস করছিলেন স্থানীরা। বুধবার দুপুরে সরকারি বন রক্ষক এনামুল
হকের নেতৃত্বে প্রায় ১৩৫ জনের বন বিভাগের সশস্ত্র বাহিনী ওই জমি দখল নিতে আসেন।এ সময়
এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায় বন বিভাগের কর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
গাজীপুর বন বিভাগের বিট অফিসার মাহমুদুল হক মুরাদ বুধবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, বন
বিভাগের ২৫ একর জমির মধ্যে ৮ একর জমি বেদখল হয়েগেছিল ওই জমি উদ্ধার করতে অভিযান চালাতে হয়েছে।
তিনি বলেন “এস এ”এবং “আর এস” রেকর্ড এ ওই জমি বন বিভাগের হওয়া সত্তেও দুই শতাধিক পরিবার
জমি দখল করে ঘর-বাড়ী নির্মান করে, ১২০টি বাড়ী ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং মৃত কাঞ্চন মিয়ার ছেলে সাইদুর
রহমান কে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের নিজ অস্ত্র দিয়েই ফাকা গুলি ছোড়া হয়েছে, তবে এতে কেউ
হতাহত হয়নি। গ্রেফতার কৃত সাইদুর কে পুলিশে দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তারা বলেন, সাইদুর
কে পুুলিশে দেওয়া হয়নি।আমাদের গ্রেফতার ও চার্জশিট দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
উক্ত ব্যাপারে বিরুলিয়া ইউনিয়নের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই তারিকুল ইসলাম জানান জমির
মালিকানা রেকর্ডে কোর্ট অব ওয়ার্ড আইন এবং বন বিভাগের নামে একটি করে রেকর্ড থাকায় এই
ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে তিনি বলেন যারা বাড়ী ঘর নির্মাণ করেছিল তারা কোর্ট অব ওয়ার্ড আইনে জমি
এক বছরের জন্য নিচ নিয়েছিল। তবে বন বিভাগ কোন নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে বলে
তিনি স্বীকার করেন।এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ঘটনা স্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতয়েন করা
হয়।এলাকা বাসি জানায়, গত কয়েকদিন আগে শ্যামপুর কুমারখোদা এলাকায় মোটা আংকের টাকার
বিনিময়ে বন বিভাগের কয়েক একর জমি দখল করে বাড়ী ঘর নির্মান করে স্থানীয় জসিম গ্রুপ।
এ ঘটনার পর দুপুরে গাজীপুর বন বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের জমি উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেয়
এতে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।বন বিভাগের কর্মীরা প্রায় ১০০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে, এতে এলাকার
সবার মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।এ সময় স্থানীয়রা নিরাপদ স্থানে আশ্র্রয় নেয়। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা
তাদের জমি উদ্ধার করতে শতাধিক বাড়ী-ঘর ভেঙ্গদেন।এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।স্থানীদের
অভিযোগ বন বিভাগের জমি দখল করে স্থানীদের বাড়ীÑঘর নির্মাণ করেদেয় জসিম গ্রুপের লোকজন।তার
বিনিময়ে তিনি স্থানিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়েনেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে গেলে জসেব আবুল হোসেন, আনিসুল হক ক্লিপটন, শহিদ খাঁ, রনি হাওলাদার,
আনোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েক জন স্থানীয় লোকজন জানান আমেনা বেগম (৩৭) সহ প্রায় ৪০ জন আহত
হয়েছেন এই সংঘর্ষের ঘটনায়। উক্ত ঘটনাস্থলে বৃহস্পতিবার বিরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুল
ইসলাম সুজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার দিন আমি বাড়ীতে ছিলাম ঘটনা ঘটে যাওয়ার
পড়ে শুনেছি।আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এসে যা দেখলাম বিষয়টি দুঃখ জনক।শত শত পরিবার এখন
খোলা আকাশের নিচে।দোষিদের শাস্তি হোক এটাই আমি চাই।এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানা অফিসার
ইনচার্জ (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন সাইদুরকে থানায় সপর্দ করা হয়নি।ভুক্ত ভোগিদের দাবি ৩১.৫ একর
জমির লিজ বিষয়টি অপেন সিক্রেট ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।উক্ত বিষয়ে
সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।