অনলাইন ডেস্কঃ-
অবশেষে এমপিওভুক্তির দাবি পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরআমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।
অনশন কর্মসূচির ষষ্ঠ দিন শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ সাজ্জাদুল হাসানের মাধ্যমে দাবি পূরণের আশ্বাস পান আন্দোলনকারীরা। এসময় শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব তাদের জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই অনশন ভেঙেছেন। কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। তারা আবার আগের মতো ক্লাসে ফিরে যাবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কয়েকশ’ শিক্ষক-কর্মচারী। পরে গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে তারা শুরু করেন আমরণ অনশন।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা প্রত্যাখান করে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ষোষণা দেন শিক্ষকেরা। সে সময় তারা বলেছিলেন, এমপিওভুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস পেলেই তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন।
গত ছয় দিনের অনশনে প্রায় শতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুক্রবার সকালে প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ’ শিক্ষক-শিক্ষিকা-অফিস সহকারী কর্মসূচি পালন করছেন। কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্যালাইন নিয়ে অনশন অব্যাহত রাখেন।
এদিকে, সকালে শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার, বাংলাদেশ ছাত্রফেডারেশন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
এরপর বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পাওয়ার পর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মাহমুদুন্নবী ডলার। এরপর আন্দোলনকারীরা উল্লাসিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিভিন্ন শ্নোগান দেন। আনন্দিত মনে তাদের অনেকেই বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নেন।
শিক্ষকেরা বলেন, তাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। এবার তাদের বঞ্চনা দূর হবে। তারা অন্য শিক্ষকদের মতো সরকারি সহায়তা পাবেন। সংসারে হাসি ফিরবে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মনোনিবেশ করবেন।
উল্লেখ্য, দেশে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত পাঁচ হাজারের মতো নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা এক লাখেরও বেশি এবং শিক্ষার্থী ২৫ লাখেরও বেশি।