জাকির হোসেন, পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ টাকার অভাবে
আবারো চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বৃক্ষশিশু
রিপন রায়ের (৯)। গত অক্টোবরের শেষ দিকে দুই মাসের জন্য ঢাকা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার
কেটগাঁও গ্রামে নিজ বাড়িতে এসেছিল সে। জুতা সেলাই কাজ করা
রিপনের বাবা মহেন্দ্র রায় জানান, ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের শিশু
ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল রিপন। এরইমধ্যে তার হাতে-পায়ে তিন দফা অপারেশন করা
হয়েছে। আগের থেকে কিছুটা সুস্থ হলেও আরো অপারেশন হবে বলে
ডাক্তাররা তাঁকে জানিয়েছেন। এজন্য দুই মাসের জন্য বাড়িতে ঘুরতে
পাঠানো হয় রিপনকে। মহেন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই মাস হয়ে গেছে। কিন্তু এখন
আমি ছেলেকে নিয়ে যে আবারো ঢাকা মেডিকেলে যাব সেই টাকা
আমার নাই। জুতা সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চলে আমার।দুই মাস হয়ে
গেছে। দুই মাস পর ডাক্তাররা স্যাররা নিয়ে যেতে বলেছিল। কিন্তু এখন যাবার
টাকাই নাই।’ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে সহযোগিতা করা হলেও
এখন কোন সহযোগিতা করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। এবিষয়ে
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, ‘আমি
নতুন এসেছি। এই বিষয়ে জানা নেই।’ পরে কথা বলবে এই বিষয়ে বলে
তিনি ফোন কেটে দেন।
প্রসঙ্গত, জন্মের ৩ মাস পর হাতে পায়ে গুটি বসন্তের মতো আচিঁল দেখা
দেয় রিপনের। বয়স বাড়ার সাথে সাথে গুটির মতো আচিঁলগুলোও বাড়তে
থাকে। স্থানীয় চিকিৎসকদের ঔষুধেও কাজ না হলে পাশ্ববর্তী জেলা দিনাজপুর
ও রংপুরের ডাক্তারের শরণাপন্ন হন রিপনের পরিবার। দীর্ঘ ৬ বছর ঔষুধ খেয়েও
উন্নতি দেখা দেয় না বরং হাতে-পায়ের আচিঁলগুলো গাছের শিকড়ের মতো
আকার ধারণ করতে শুরু করে। কিন্তু টাকা অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে
পারছিলেন না জুতা সেলাইয়ের কাজে নিয়োজিত রিপনের বাবা মহেন্দ্র।
এরপর স্থানীয় এক সাংবাদিক রিপনকে নিয়ে সংবাদ করলে জেলা প্রশাসন সহ
অনেকেই রিপনের চিকিৎসার সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। পরে
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় রিপনকে ২০১৬ সালের ২১
অগাস্ট ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
এরইমধ্যে রিপনের হাতে পায়ে তিন বার সফল অপারেশন করা হয়েছে। আগের
থেকে অবস্থার বেশ উন্নতিও হয়েছে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে আরো সময়
লাগবে এমনটাই বলছেন চিকিৎসকরা।