ঢাকার গুলিস্তানে ফুটপাতের হকারদের সঙ্গে বিপণি বিতানের ব্যবসায়ীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে ওই এলাকায় গাড়ি চলাচল আড়াই ঘণ্টা বন্
রাস্তা-ফুটপাতে আর হকার বসবে না: মেয়র খোকন
রোজার মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে ইফতারের আগে এই সংঘর্ষের কারণে কর্মব্যস্ত ওই এলাকায় ঘরমুখো মানুষকে গাড়ি না পেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
হকারদের উচ্ছেদ করে যান চলাচলের উপযোগী করা ফুটপাত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের পরিদর্শনের পরপরই এই সংঘর্ষ বাঁধে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক ওবায়দুর মাসুম জানান, বেলা ৩টায় মেয়র চলে যাওয়ার পরপরই ঢাকা ট্রেড সেন্টারের দোকান মালিক ও ফ্লাইভারের নিচে ফুটপাতে বসা হকারদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়।
তখন বায়তুল মোকাররম থেকে গুলিস্তান, নবাবপুর এবং ফুলবাড়িয়া বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গুলিস্তানে আসাদ পুলিশ বক্স থেকে নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীগামী বাসও চলছিল না।
বিকাল পৌনে ৬টায় সংঘর্ষ থামার পর গাড়ি চলাচল পুনরায় শুরু হয়। তবে তখনও দুই পক্ষে উত্তেজনা চলছিল।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের সহকারী কমিশনার মাজহারুল ইসলাম বলেন, পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
অতিরিক্ত উপকমিশনার তারেক বিন রশিদ বলেন, “ফুটপাতে দোকান বসানো নিয়ে মার্কেটের দোকান মালিক এবং হকারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এ কারণেই আজকের এই ঘটনা ঘটেছে।”
সংঘর্ষের জন্য ব্যবসায়ী ও হকার দুই পক্ষই একে অপরকে দায়ী করেছে।
ঢাকা ট্রেড সেন্টারের ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন , “মার্কেট কমিটির লোকজন ফুটপাতের দোকানদারদের চলে যেতে বলে। কিন্তু তারা না গিয়ে কমিটির লোকদের মারধর শুরু করে। তখন ব্যবসায়ীরা জোট বেঁধে হকারদের উপর চড়াও হয়।”
ঢাকা ট্রেড সেন্টার (দক্ষিণ) দোকান মালিক সমিতির সহসভাপতি আসলাম হোসেন বলেন, “তারা (হকার) দীর্ঘদিন জোর করে আমাদের মার্কেটের বারান্দা এবং সামনের ফুটপাত দখল করে রেখেছে।
“তাদেরকে বার বার জায়গা খালি করতে বলা হয়েছিল। গতকাল তাদেরকে আজ (বৃহস্পতিবার) ১২টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। তারপরও তারা সরেনি।”
হকারদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে কমিটির সদস্যরা গেলে তারা ব্যবসায়ীদের উপর আক্রমণ করে বলে তার অভিযোগ।
অন্যদিকে কবির হোসেন নামের এক হকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার রাস্তা থেকে চলে আসতে বলেছে, আমরা চলে আসছি।
“কিন্তু মার্কেটের দোকানদাররা আমাদেরকে ফুটপাতেও বসতে দিচ্ছে না। তারা দলবল নিয়ে এসে দোকানপাট ভাংচুর করেছে, মালামাল লুটপাট করেছে।”
আরেক হকার মো. সজিব মিয়া বলেন, “আমার ৩৮ হাজার টাকার মালামাল দোকানদাররা নিয়ে গেছে। পুলিশ দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছে, কিছুই বলেনি।”
সজিব বলেন, এই এলাকায় প্রায় ৫ হাজার হকার প্রতিদিন মালামাল বিক্রি করে সংসার চালান।
গুলিস্তানের ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করতে কয়েকদিন আগে অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও পুলিশ। দখলমুক্ত ফুটপাত দেখতে বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় গিয়েছিলেন মেয়র।
তিনি বলেছেন, একে একে সব ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করা হবে।