শরীরের ওজন নিয়ে কম কথা শুনতে হয় না মেঘনাকে (ছদ্দনাম)! বিশেষ করে যখন কোনো শপিং মলে কাপড় কিনতে যান। দর্জির দোকানে গেলেও রক্ষে নেই। কাপড়ের মাপ দেওয়ার সময় চারপাশে সবার মুখটেপা হাসি ঠিকই তাদের চোখে ভেসে ওঠে। রেডিমেড কাপড়ের দোকানগুলোতে তার সাইজ অনুযায়ী কাপড় তো নেই-ই, উল্টে তিনিই যেনো মোটা হয়ে বড় অপরাধ করে ফেলেছেন এমন ভাব। এ নিয়ে দিন দিন আত্মবিশ্বাস কমছে তার। ধীরে ধীরে নিজের ওপরেও এক ধরনের বিরক্তি তৈরি হচ্ছে।
মেঘনা একা নন। একইরকম সমস্যা তার মতো অনেকেরই। তবে মেঘনাদের জন্য সুসংবাদ। তাদের ‘প্লাস সাইজ’-ই তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ‘প্লাস সাইজ’ একটি তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। বলা ভালো, একটি উদ্যোগ। উদ্যোগটি এসেছে তরুণ উদ্যোক্তা অতন্দ্রিলা হুদার মাথা থেকে। অতন্দ্রিলা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে অধ্যয়নরত (আন্ডার গ্র্যাজুয়েট-শেষ বর্ষ)।
ভিন্ন এ উদ্যোগ নিয়ে অতন্দ্রিলার ভাষ্য, এটি খুবই সাধারণ চিত্র, ফ্যাশন হাউসগুলো রেগুলার সাইজেই তাদের কাপড়গুলো বাজারে আনে। যে কাপড়গুলো সবার নজর কাড়ে, দেখা যায়, সেগুলোর প্লাস সাইজ পাওয়া যায় না। তাহলে মোটারা কি ডিজাইন করা কাপড় পরবে না? আমাদের প্লাস সাইজ ঠিক উল্টোটা করবে। তারা যেনো আত্মবিশ্বাস ও নিজের পছন্দসই কাপড় পরতে-কিনতে পারেন, এজন্য ‘প্লাস সাইজ’ কোনো রেগুলার সাইজের কাপড় বাজারে আনবে না।
আমরা অনেকদিন ধরেই সমস্যাগুলো নিয়ে ভাবছিলাম। সমাধানের পথ হিসেবেই এরকম কিছু করার ভাবনা মাথায় আসে। সেই ধারাবাহিকতায় গত ০১ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে এসেছে ‘প্লাস সাইজ’, যোগ করেন তিনি।
প্রাথমিকভাবে শুধু ফেসবুক পেইজের মাধ্যমেই হাজির হয়েছে প্লাস সাইজ। ক্রেতারা পেইজের ইনবক্সে মেসেজ করে অর্ডার করতে পারবেন। পেমেন্ট ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’।
‘আমরা প্রাথমিকভাবে অল্প আয়োজন নিয়ে ক্রেতাদের আগ্রহ বোঝার চেষ্টা করছি। তাদের সাড়া পেলে ধীরে ধীরে প্লাস সাইজের কলেবর বাড়বে। তখন নিজস্ব ওয়েবসাইট, স্টোর, স্টাফ সবই চলে আসবে। আপাতত রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস’র একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকেই ক্রেতাকে কাপড় সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তারা চাইলে পরবর্তীতে অন্য সুবিধাও বাড়বে।’
কাপড়ের ক্ষেত্রে প্লাস সাইজ শুরুতে কটন, লিলেন ও ক্রেপ জর্জেট ব্যবহার করছে। কাপড়গুলো ডিজাইন করছেন অতন্দ্রিলা নিজেই।
এ উদ্যোগ নিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হেলাল উদ্দিনের মত, প্লাস সাইজের কাপড় খুঁজে পেতে ভীষণ কষ্ট হয়। আর পেলেও অধিকাংশই পছন্দ হয় না। এজন্য সবসময় বানিয়ে কাপড় পরতে হয় আর এতে একঘেয়েমি চলে আসে। প্লাস সাইজের এ উদ্যোগ প্রশসংনীয়। আশাকরি তারা আমাদের অনেক সুন্দর সুন্দর কাপড় উপহার দেবে।
বিস্তারিত দেখতে ঘুরে আসুন প্লাস সাইজের পেসবুক পেইজে- https://www.facebook.com/PlusSize2016/