নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় জমি দখল, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি,
মাদকসহ নানারকম অপরাধমুলক কর্মকান্ড বেড়েই চলেছে বলে এলাকাবাসীর দাবি। এসব অপরাধের সঙ্গে
জড়িত প্রভাবশালী সন্ত্রাস বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষগুলো প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না বলেই
সংশ্লিষ্ট উপর মহল পুলিশ প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
সুত্রে জানা গেছে,আশুলিয়ার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে, এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমুলক
কাজ করছে সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয় যে,নিরাপদ “ক্রাইম জোন” এ পরিনত
হয়েছে রাজধানীর নিকটবর্তী শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া। এ এলাকায় খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস আর মাদক
ব্যবসা যেন অনেকটাই স্বাভাবিক ঘটনা মনে হয় আশুলিয়াবাসীর কাছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে
বাড়ছে জমি দখল। তথ্যমতে ২০১৬ ইং থেকে ২০১৭ ইং শেষ পর্যন্ত আশুলিয়ায় ১১ মাসেই ১২৩ টি লাশ উদ্ধার
করেন আইনশৃঙ্খা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। অনেকেই মনে করেন যে, রাজধানীতে অপরাধ করে কেউ সামাল
দিতে পারে না, কারণ সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সবসময় নিরাপত্তার চাদরে ডেঁকে
রাখেন তাই অপরাধীরা সহজেই আটক হয়।
অভিমতঃ অনেকেই বলছেন, যদিও ঢাকা জেলার (আশুলিয়া থানা) শিল্পাঞ্চল কিন্তু একদিকে ধামরাই-মানিকগঞ্জ
জেলা, টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলা সীমান্ত এলাকা, উত্তরা, তুরাগ, মিরপুর নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায়
অপরাধীদের সুযোগসুবিদা পেয়ে থাকে আশুলিয়া। এই আশুলিয়া নিরাপদ “ক্রাইম জোন” এ পরিণত
হয়েছে বলে জানান অনেকেই। সুত্রে জানা গেছে,অন্যদিকে আশুলিয়া থেকে মাত্র এক ঘন্টার রাস্তা যমুনা ও
পদ্মা নদীর চরাঞ্চল, সেখান থেকে আসা কিছু সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে সহজেই
তারা পালিয়ে যেতে পারে। স্থানীয় ও বহিরাগত কিছু লোক ব্যবহার হচ্ছেন প্রভাবশালী ছত্রছায়ায়। এসব
সন্ত্রাস বাহিনীর সদস্যদের অত্যাচার দিনদিন বেড়েই চলেছে। এ যেন দেখার কেউ নেই!
উক্ত ঘটনার একটি উল্লেখ্য ঃ ঢাকার আশুলিয়া থানার জামগড়া বেরুণ এলাকার ইস্টার্ণ হাউজিং লিঃ
দিয়াখালি মৌজার সি. এস-১৯৭, এস এ-২৯৮, আর এস খতিয়ান নং-৪১১, সি এস,ও এস এ-১৯৮, আর
এস দাগ নং-১৩৪৯- জমির পরিমান ৮.১৫ শতাংশ। যাহার প্রথম ক্রয় করেন স্থানীয় রোমান ভুঁইয়া, আবার
বাগেরহাট জেলার মোস্তফা কামাল গেন জমি ক্রয় করেছেন রোমান ভুঁইয়ার কাছ থেকে। এর মধ্যে উক্ত জমি
২ জনের মধ্যে কাউকে দলিল করে দেননি ইস্টার্ণ হাউজিং লিঃ কোম্পানির মালিক। শুধুমাত্র অনুমতি নিয়ে
সেখানে মোস্তফা কামাল পাকাঘর স্থাপনা করেন এবং কয়েকটি দোকানঘর ও বাসা বাড়ি ভাড়া দেন। এর
প্রায় এক বছর গত হওয়ার পর আবার ওই জমি ও বাড়ি-ঘর স্থাপনাসহ অন্য একটি গ্রæপ দখল করে
সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। তারা হলেন, ঢাকাগং নেক্সট কালেকশন ফ্যাক্টরীর বেলাল হোসেন ও তার লোকজন।
মোস্তফা কামাল কান্নাজনিত অবস্থায় সাংবাদিকদের বলেন, আমার সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে এই জমি
কিনে ঘর বাড়ি করেছি, আমি ভাড়া তুলে সংসার চালাতাম, এখন আমি পথে বসেছি,আমি এখন
গৃহহারা। এই জমি ক্রয় করার সময় এবং স্থাপনা করার সময় কেউ এসে আমাকে বাঁধা দেননি। এখন এসে
অবৈধ ভাবে জবর দখল করে আমার গৃহহারা করেছে নেক্সট কালেকশন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল
হোসেন সাহেব। আমি কি অপরাধ করেছি জানি না, আমার সাথে বেলাল সাহেবের কোনো প্রকার
শক্রতা ছিলো না, তবে কেন আমার বাড়ি ঘর দখল করলেন তিনি? এই জন্য আমার দলের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
জননেত্রী শেখ হাসিনা’র হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি ও
আকুল আবেদন, আপনারা মানবতার কল্যাণে কাজ করেন, সেবাই আপনাদের ধর্ম। আমি আইনের
প্রতিশ্রদ্ধাশীল, আইনে যদি আমি জমি বা বাড়ি পেয়ে থাকি তাহলে আমার বাড়ি আমাকে দিয়ে দিবে
বেলাল সাহেব। আমার জমি পূর্ণউদ্ধার করে দিলে আমরা অসহায় পরিবারটি বাঁচবে, আপনারা আমাদের
পরিবারটির জন্য সাহায্য করুন। তানাহলে না খেয়ে,অনাহারে অর্ধাহারে থেকে মরে যাবো আমরা। আমি
সকলের কাছে সঠিক বিচার প্রার্থনা করছি। বিশেষ করে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এরকম অনেক
ঘটনাই ঘটছে বলে জানান অনেকেই।
এ বিষয়ে ইস্টার্ণ হাউজিং লিঃ এর সাভারের ম্যানেজার আসাদ উল্লাহ সরকার বলেন, এই জমিসহ অনেক
জমি অবৈধ ভাবে দখল করেছেন নেক্সট কালেকশন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল হোসেন সাহেব।
কোম্পানী রোমান ভুঁইয়ার কাছে জমি বিক্রি করেছেন, রোমান ভুঁইয়া আবার মোস্তফা কামালের কাছে
সেই জমি বিক্রি করেছেন, এখানে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বেলাল সাহেব
অবৈধ ভাবে বাড়ি ঘর দখল করেন কেন? আমরা আইনকে সম্মান করি, আইনে যদি জমি আমরা পাই তা
বেলাল সাহেব জবর দখল করে রাখবেন কেন? এ বিষয়ে জানার জন্য বেলার হোসেন এর সাথে মোবাইলে ফোনে
যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। পর্ব ৩।