ঝালকাঠি সংবাদদাতাঃ-ঝালকাঠির সদর উপজেলার পোনাবালিয়া
ইউনিয়নের পশ্চিম দেউরী এলাকার প্রায় ১ কিলোমিটার বেরিবাধ
ভেঙে গেছে। এতে বিষখালী নদী থেকে পানি প্রবেশ করে
বিস্তীর্ণ প্লাবিত হয়েছে। অমাবস্যার জোয়ারে গত কয়েক দিন
ধরে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জেলার নদী তীরবর্তী
স্থানগুলোতে পানি প্রবেশ করায় কয়েক হাজার পরিবার পনিবন্দি হয়ে
পড়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার পোনাবালিয়া
ইউনিয়নের পশ্চিম দেউড়ী এলাকার দীর্ঘ প্রায় ১ কিলোমিটার
বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পানি প্রবেশ করছে। তলিয়ে গেছে আমন
বীজ তলা। পানি ঢুকে গেছে আবাসিক এলাকায়। শুধু
পোনাবিলায়ই নয় সুগন্ধা, বিষখালী ও গাবখান নদীতে পানি
বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৪ উপজেলার নদী তীরবর্তী স্থানগুলোতে পানি
ঢুকে পানের বরজ, ফসলের ক্ষেত, মৎস্য খামারসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
জনসাধারণ। শহরের কলাবাগান, নতুন চর, পৌর খেয়াঘাট, কলেজ
খেয়াঘাট, জেলেপাড়া, কৃষ্ণকাঠি, কিফাইত নগর, পশ্চিম
ঝালকাঠি, সদর উপজেলার পোনাবালিয়া, শেখেরহাট, গাবখান-
ধানসিড়ি, নলছিটি পৌর এলাকার নদী তীরবর্তী এলাকাসহ
নাচনমহল, রানাপাশা, মোল্লারহাট, কুলকাঠি, কুশঙ্গল, দপদপিয়া
রাজাপুরের বড়ইয়া, মঠবাড়ি, কাঠালিয়ার সদর, আমুয়া, দক্ষিন
চেচঁরী, শৌলজালিয়া, আওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশত
গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার শুক্রবার ও শনিবার দুপুরে পানির চাপ বেশি হওয়ায়
আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী ভবন
সমূহের ফ্লোর পানিতে তলিয়ে গেছে। শানিবার আধাবেলা ক্লাস
করিয়ে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পোনাবালিয়া
ইউনিয়নের নাগপাড়া এলাকার কৃষক সরোয়ার হোসেন বলেন, ৭/৮
একর জমিতে আমন চাষ করেছি। কয়েকদিনের বন্যায় সব বীজ ভেসে
গেছে। মাত্র ১/ দেড় একর জমির বীজ রয়েছে বাকি সবই নষ্ট হয়েছে।
আঃ আজিজ খান বলেন, আমাদের এতো ক্ষতি হলেও কৃষি বিভাগের
কেউ আমাদের দিকে তাকায় না। এ এলাকায় যিনি উপসহকারী
কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন তিনি এলাকায় আসলে প্রকৃত
কৃষকদের এড়িয়ে নেতাদের সাথে কথা বলে চলে যান। পশ্চিম দেউরী
এলাকার রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, পানি ওঠে আমাদের ঘরবাড়ি,
রাস্তাঘাট ও দোকানপাট সবই তলিয়ে গেছে। রাতে পানি বৃদ্ধি ও
প্রচুর বাতাস দেখে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছিলাম।
শহরের কুতুবনগর আলিম মাদ্রাসার আবাসিকের ছাত্ররা জানান,
আমরা রাতে চৌকির নীচে জুতা রেখে ঘুমিয়েছি। ফজরের সময়
ওঠে আর জুতা খুঁজে পাই না, পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
শিক্ষক মৌলভী আবুল হাসান বলেন, মাদ্রাসার ইয়াতিম খানা,
লিল্লাহ বোর্ডিং ও হেফজখানার ৮৬ জন ছাত্র আবাসিকে থাকে।
নদীর পাড়ে রান্নাঘর থাকায় দুপুরে ও রাতে ছাত্রদের পানিতে ভিজে
খাবার নিতে হয়। ছোট ছাত্ররা হোচট খেয়ে পড়ে খাবারও নষ্ট হয়।