সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ কুড়িগ্রামের
রাজারহাটে সোনালী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামের এনজিও গ্রাহকের সঞ্চয়ের
টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনা রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে তদন্তে প্রমান
হলেও টাকা ফেরত পাননি গ্রাহকরা।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা সদরের ডাকঘর অফিসের পার্শ্বে ভাড়াটে ঘরে
সোনালী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামের একটি এনজিও গ্রাহক সংগ্রহ করে
ডিপিএসের মাধ্যমে সঞ্চয় গ্রহণ ও ঋণ দান কার্যক্রম শুরু করে। একপর্যায়ে
২০১৬ই্ধসঢ়;ং সনে এনজিওটি’র ৫শতাধিক গ্রাহকের ৫বছর ও ১০ বছর মেয়াদী
ডিপিএসের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় তারা মুনাফা সহ টাকা ফেরতের আবেদন জানান।
এরপর থেকে টাকা ফেরতে টালবাহনা শুরু হয়।
পরে সোনালী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের রাজারহাট অফিসে কর্মরত কর্মী শফিকুল
ইসলাম,আব্দুল হাই,তছলীম উদ্দিন ,তপু কুমার ও মাহবুবা আজাদ ফাউন্ডেশনটির
মহাপরিচালক কর্তৃক গ্রাহকের সঞ্চয়ের টাকা আতœসাতের অভিযোগে রংপুর
বিভাগীয় কমিশনারের নিকট সঞ্চয়কারীদের নাম পরিচয় ও জমাকৃত টাকার পরিমান
উল্লেখ পূর্বক অভিযোগ দাখিল করেন। এরপ্রেক্ষিতে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের
নির্দেশে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত
করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম
জানান, তদন্তে ২২৩জন সঞ্চয়কারীর জমা বই, অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনা করে এবং
তাদের সাথে কথা বলে ২৩লক্ষ ৩৯হাজার ৫শত ৬৫টাকা আতœসাতের প্রমাণ পেয়ে তদন্ত
প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
উন্নয়নকর্মী তছলীম উদ্দিন জানান, সঞ্চয়ের প্রায় অর্ধকোটি ঘটনা ফেরত চেয়ে
সংস্থাটির মহাপরিচালককে উকিল নোটিশ পাঠানো হলেও তিনি তা গ্রহন করেননি।
ফলে আমরা গ্রাহকদের চাপের মুখে রয়েছি।
সোনালী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ রাজারহাট শাখার গ্রাহক মোন্নাফ আলী,মরিয়ম
বেগম,এরশাদুল অভিযোগ করেন, এনজিও ব্যুরো ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী
অথোরেটির অনুমোদন দেখে সরল বিশ্বাসে তারা সঞ্চয় করে এখন পথে বসার উপক্রম
হয়েছেন।
সোনালী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ রাজারহাট শাখার উন্নয়ন কর্মী শফিকুল ইসলাম
অভিযোগ করেন, সংস্থাটির মহাপরিচালক এ,কে,এম শামসুদ্দিন আজাদ নির্দেশনায়
আদায়কৃত অর্থ প্রধান কার্যালয়ের একজন কো-অর্ডিনেটর প্রতিমাসে শাখা
কার্যালয়ে এসে খরচাদি বিয়োগান্তে অবশিষ্ঠ টাকা প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে
যেত,কিন্তু অধিকাংশ গ্রহকদের ডিপিএসের মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায় গ্রাহকের সঞ্চয় ও
মুনাফার টাকার জন্য আবেদন জানানোর পর তিনি টালবাহনা শুরু করেন।
সোনালী ফাউন্ডেশন অফিস ঘরের মালিক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম
আজাদ গ্রাহকের বিপুল পরিমান টাকা আতœসাতের বিষয়ে অবগত থাকার সত্যতা
স্বীকার করে জানান,তার ২বছরের ঘর ভাড়ার টাকাও তিনি পাননি।
রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোখলেসুর রহমান জানান,এবিষয়ে কেউ
থানায় অভিযোগ করলে তিনি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
এবিষয়ে সোনালী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মহাপরিচালক একেএম শামসুদ্দিন
আজাদের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে
পাওয়া যায়নি।
সোনালী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সহকারী পরিচালক শাহাদাৎ হোসেনের সাথে
যোগাযোগ করা হলে জানান,আমি অনেক আগেই ওই সংস্থা থেকে চাকুরী ছেড়ে
দিয়েছি,আমার কিছু জানা নেই।