জাকির হোসেন, পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ- মাদকদ্রব্যের মামলার ভয়
দেখিয়ে সোর্সের মাধ্যমে অর্থ আদায় বাণিজ্য করার অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের
পীরগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই মোস্তফাকে
পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে এক
আদেশে তাকে ক্লোজ করা হয়।
ওষুধ ব্যবসায়ী অনিল রায় জানান, পীরগঞ্জের বৈরচুনা বাজারের ভারতী ফার্মেসী
নামে একটি ওষুধের দোকান রয়েছে তার। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সেখানে দোকান
করে আসছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে বৈরচুনা ইউনিয়নের জগন্নাথপুর পুলিশ
ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই মোস্তফা এবং এএসআই শামসুজ্জোহা তার ওষুধের
দোকানে আসেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তারা বলেন, ওষুধের দোকানে
ফেন্সিডিল আছে। এ কথা শুনে তিনি (দোকান মালিক) চ্যালেঞ্জ করেন এবং
পুলিশকে দোকান তল্লাসি করে দেখার আহবান জানান। এরপর পুলিশ তার দোকানের
ভিতরের একটি কাটুন দেখিয়ে দিয়ে সেটি খুলতে বলেন। দোকান মালিক ঐ
কার্টুনটি খুলতেই একটি ফেন্সিডিলের বোতল বেরিয়ে আসে। এতে হতভম্ব হন
দোকান মালিক। এরপর দোকান মালিক অনিলকে পুলিশ ক্যাম্পে যেতে বলে ইনচার্জ
মোস্তফা। এরই মধ্যে পুলিশের সোর্স ইব্রাহীম এসে বিষয়টি মিটমাট করে
দেওয়ার কথা বলে ৫ হাজার টাকা চায় দোকান মালিকের কাছে। দেন দরবারের এক
পর্যায়ে সন্ধায় ২ হাজার টাকা নিয়ে ইব্রাহীম ও পুলিশ কেটে পড়ে।
দোকান মালিক বিষয়টি পরদিন শুক্রবার বৈরচুনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ
নেতৃবৃন্দকে জানায়। এ নিয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ইউনিয়ন
আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে বৈঠক বসে। এতে ক্যাম্প ইনচার্জ মোস্তফা এবং এ
এস আই শামসুজ্জোহা, সোর্স ইব্রাহীম উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে
ইব্রাহীমকে উত্তম মধ্যম দেওয়া হয়। এ সময় অতিষ্ঠ লোকজন ইউনিয়ন
আওয়ামীলীগের অফিস ঘিড়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা ঐ দু’পুলিশ কর্মকর্তা
সহ ইব্রাহীমের বিচার দাবী করে এবং আওয়ামীলীগের অফিসের ভিতরে তাদের
অবরুদ্ধ করে রাখে। বৈঠক চলাকালে এক পর্যায়ে সোর্স ইব্রাহীম ঐ ওষুধ
ব্যসায়ীকে ২ হাজার টাকা ফেরত দেয়। পরে থানার ওসি আমিরুজ্জামান ও উপজেলা
আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আখতারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যায়। এ সময়
জনতার মাঝে উত্তেজিত ভাব দেখে পরিস্থিতি সামাল দিতে সোর্স ইব্রাহীমকে
আটক করে পুলিশ। পরে জগন্নাথপুর পুলিশ ক্যাম্পে থানার ওসি সহ উপজেলা পুজা
উদযাপন পরিষদের নেতাদের উপস্থিতিতে আবারো বৈঠক হয়। বৈঠকে ইব্রাহীম সহ
পুলিশের ৯ জন সোর্সের নাম উঠে আসে। পুলিশ সহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নেওয়া দাবী জানানো হয় বৈঠকে। কিন্তু থানার ওসি আমিরুজ্জামান পুলিশকে
আড়াল করে শুধু সোর্সদের নামে মামলা করার কথা জানান।
এ ঘটনা জানা জানি হলে রাতে পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মোস্তফাকে ঠাকুরগাও
পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। পীরগঞ্জ থানার ওসি আমিরুজ্জামান জানান, ক্লোজ
নয়, মোস্তফাকে এসপি ডেকে পাঠিয়েছেন।