নীলফামারী প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা সরকারী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের
দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের অনুপস্থিতির কারনে মোজাম্মেল হক চৌধুরী(৫৫)নামে এক
হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী মৃত্যুর অভিযোগ এলাকাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে ।
এমন কি রোগী হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে দীর্ঘ এক ঘন্টা পর ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষনা
করায় স্বজনেরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নিহত ব্যক্তি উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিন বালাপাড়া গ্রামের মৃত একরামুল হক চৌধুরীর
পুত্র।
রোগী মোজাম্মেল হকের স্ত্রী রিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন,রবিরার (১১ই মার্চ)রাত ১১টা
২০মিনিটে নিজ বাসভবনে তার স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তিনিসহ পরিবারের লোকেরা
তড়িঘড়ি করে তার স্বামীকে রাত ১২টার সময় ডিমলা উপজেলা সরকারী স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে(হাসপাতালে) নিয়ে আসেন। কিন্তু সরকারী হাসপাতালে ২৪ঘন্টা জরুরী বিভাগে
চিকিৎসক উপস্থিত থাকবার কথা থাকলেও জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডাঃ
রাশেদুজ্জামান রাশেদকে না পেয়ে অপর কর্তব্যরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার
খুরশিদ আলমের কাছে চিকিৎসক কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি জানান,ডাক্তার এখন
নেই, কোয়াটারে ঘুমাচ্ছেন। পরে তিনি রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি না করিয়ে দীর্ঘ এক
ঘন্টা সময় কালক্ষেপন করে রোগী মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডাঃ
রাশেদকে খবর দিলে তিনি কোয়াটার থেকে এসে রোগী মৃত্যুর বিষয়টি স্বজনদের নিশ্চিত করেন ।
নিহতের স্ত্রী আরো অভিযোগ করে বলেন,সরকারী হাসপাতালে সব সময় সবারই চিকিৎসা সেবা
পাবার কথা থাকলেও আমরা এক ঘন্টা অপেক্ষা করেও তা পাইনি!যদি সরকারী হাসপাতালের
চিকিৎসার হাল এমনটা হয় তবে আমরা সাধারন মানুষেরা আর কোথায় গিয়ে সঠিক চিকিৎসা
সেবা পাবো।
এই হাসপাতালের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার খুরশিদ আলম সময় কালক্ষেপন ও
দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক হাসপাতালে উপস্থিত না থাকার কারনে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে,
তাই আমরা তাদের দৃস্টান্ত মুলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার খুরশিদ আলম বলেন,এক ঘন্টা
কালক্ষেপনের বিষযটি সত্যি নয়, আমি দায়িত্বে থাকা চিকিৎসককে রোগী আসবার ৩৫মিনিট
পরই বিষয়টি জানিয়েছিলাম!
জানতে চাইলে সেই সময়ের(রাতে) দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডিমলা আবাসিক মেডিকেল
অফিসার ডাঃ রাশেদুজ্জামান রাশেদ জানান,আমি ঘটনার অল্প কিছুক্ষন পুর্বে কোয়াটারে গিয়ে
ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসারের ফোন পেয়ে সাথে সাথেই হাসপাতালে
ছুটে এসে দেখি রোগী আগেই মুত্যুবরন করেছেন।আর তিনি(উপ-সহকারী) সময় কালক্ষেপন
করেছেন কি-না তা আমার জানা নেই ।
ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সারোয়ার আলম বলেন,দায়িত্ব অবহেলার কারনে
রোগী মৃত্যুর বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে রোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে
বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে!
এদিকে একাধিক স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিমলা সরকারী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল
অফিসার ডাঃ রাশেদুজ্জামান রাশেদের বিরুদ্ধে এ ঘটনাটি নতুন কিছু নয় । এর পুর্বেও তার
দায়িত্ব অবহেলার কারনে একাধিক রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও কর্তপক্ষ রহস্যজনক ভাবে রয়েছেন
নিরব ভুমিকায় !