হেলাল শেখ, নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ-
রাজধানীর মিরপুরের মধ্য পীরেরবাগে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে মো. জালাল উদ্দিন নামের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এক পরিদর্শক নিহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। আহত জালালকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, গত রাতে মিরপুরের পীরেরবাগ এলাকায় ডিবির পল্লবী জোনাল টিমের একটি দল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যায়। সেখানে সন্ত্রাসীরা গুলি চালালে পরিদর্শক জালাল মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।
রাত ১টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের পুরো ঘটনা জানান। তিনি বলেন, মধ্য পীরেরবাগের তিনতলা একটি বাড়িতে রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অভিযান চালানো হয়। কয়েকজন সন্ত্রাসী সেখানে অবৈধ অস্ত্র জড়ো করেছে—এ খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযান শুরুর পর সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন পরিদর্শক জালাল।
গোলাগুলির একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায় বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, বাড়িটিতে থাকা লোকজন সন্ত্রাসী নাকি কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য, এখনই বলা যাচ্ছে না। বাড়িতে অস্ত্র-গোলাবারুদ পাওয়া যায়নি। পুরো ভবন ও আশপাশে তল্লাশি চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করা হয়েছে। তল্লাশি শেষে পুরো ঘটনা পুলিশ জানাবে।
ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আহমেদ জানান, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই অভিযান চলাকালে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে। হামলার মুখে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে সেখান থেকে কমিশনার স্কয়ার হাসপাতালে যান। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আহত পুলিশ পরিদর্শক জালাল উদ্দিন রাত ২টার দিকে মারা গেছেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাসখানেক আগে মিরপুর পীরেরবাগ এলাকা থেকে দুই সার্জেন্টের সরকারি অস্ত্র খোয়া যায়। সেই অস্ত্র উদ্ধার করতেই এ অভিযান চালানো হচ্ছিল। গোলাগুলির খবর পেয়ে সোয়াট সদস্যরাও সেখানে যান।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের উপকমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার জানান, তিনতলা ভবনটির তৃতীয় তলায় সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছিল। ডিবি পুলিশের দলটি তৃতীয় তলায় ওঠার মুখে সন্ত্রাসীরা টের পেয়ে তাদের ওপর গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে ওই বাসা থেকে এক নারীসহ সন্ত্রাসীদের কয়েক স্বজনকে আটক করা হয়।