বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত হিজবুত তাহরীরের ২ সদস্য গ্রেপ্তার বগুড়ায় আইন কর্মকর্তা নিয়োগ বিএনপি-জামায়াতপন্থি ১০৭ জন অতি বৃষ্টির কারণে লালমনিহাট জেলায় বন্যা নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত বগুড়ায় ট্রাক পরিবহনের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার আত্মসাৎ ও মামলা টিএমএসএস সদস্যদের (RAISE) প্রকল্পের উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দীর্ঘ ১৩ বছর পর আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চাকুরী ফেরত পেলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আশুলিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিত্যক্ত চুল পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে ভাগ্য বোনার চেষ্টা আদিতমারীর নারীদের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর হলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম

অযত্নে আর অবহেলায় সৌন্দয্য হারাতে বসেছে পাঁচবিবির নন্দইলের আদিবাসী ভাস্কর্য

বাংলার প্রতিদিন ডেস্ক ::
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৮
  • ২৫৫ বার পড়া হয়েছে

 

মোঃ বাবুল হোসেন, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের নন্দইল গ্রামে
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আদিবাসীদের স্বরণে নির্মিত হয়েছে দেশের
প্রথম আদিবাসী ভাস্কর্য। জয়পুরহাট জেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার
দূরে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা চারিদিকে সবুজে ঘেরা নন্দইল, শ্রীমন্তপুর
গ্রামের কোল ঘেঁষে মাঠের মধ্যে নিরিবিলি পরিবেশে নির্মিত হয়েছে
ভাস্কর্যটি। নির্মানের প্রথমদিকে আদিবাসী সম্প্রদায় সহ স্থানীয়
এলাকাবাসী ভাস্কর্যকে ঘিরে নানাবিদ আশায় আশাবাদী হলেও কয়েক বছরের
ব্যবধানে ভাস্কর্যটির সঠিক রক্ষনাবেক্ষন, অযতœ আর অবহেলায় আজ
ভাস্কর্যটির সৌন্দয্য হারাতে বসেছে।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় ১৯৭১ সালের ২৬ শে আগষ্ট সোমবার
পরন্ত বৈকালে তৎকালীন কড়িয়া ক্যাম্পের পাক সেনারা ধরঞ্জী ইউনিয়নের
বিভিন্ন স্থানে মহুরা দিয়ে যাওয়ার সময় নন্দইল গ্রামের লক্ষণ হেমরমের দুই পুত্র
খোকা হেমরম, মন্টু হেমরম, একই গ্রামের কালু সরেনের পুত্র জোহন সরেন ও
সরেন হেমরম কে বাড়ী থেকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে
উপজেলার পাড়ইল তিতলতলা নামকস্থানে তাদের হাত পা বেঁধে মাটির গর্তে
ফেলে বন্দুকের ব্যায়নট দিয়ে নির্মম নির্যাতন করে জীবন্ত অবস্থায় মাটি
চাপা দিয়ে হত্যা করে।
স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পর হলেও পাঁচবিবির উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম
সংগঠক, বিশিষ্ট কলামিষ্ট সাংবাদিক আমিনুল হক বাবুলের ঐকান্তিক
প্রচেষ্টায় ২০১০ ও ২০১১ অর্থ বছরে জয়পুরহাট জেলা পরিষদের অর্থায়ন ও
তত্বাবধানে নন্দইল গ্রামে ১৯৭১- এ শহীদ আদিবাসীদের স্বরণে ভাস্কর্যটি
নির্মিত হয়। আদিবাসীদের ঐতিহ্য ও সংগ্রামের ইতিহাসের প্রতীক
হিসেবে শহীদের স্বরণে নির্মাণ করা হয়েছে উচু বেদীর উপরে তীর ধনুক
হাতে পুরুষ এবং নারীর অংশ গ্রহণমূলক ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটির শিল্পী রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক জনাব কনক।
মূল ভাস্কর্যের চর্তুদিকে নিরাপত্ত বেষ্টনী দিলেও ভাস্কর্য রক্ষানাবেক্ষনের কোন
সু-ব্যবস্থা নেই। ভাস্কর্যের সৌন্দয্য হারিয়ে গেছে অনেকাংশে। ভাস্কর্যের
তীর সংবলিত অংশের তীর নেই, কে কারা তা ভেঙ্গে ফেলেছে। তীর রাখার বাক্সের
তীরের বের হয়ে থাকা অংশ গুলো বাঁকিয়ে ও ভেঙ্গে নষ্ট করেছে দিয়েছে। এত
করে ভাস্কর্যটির সৌন্দয্য নষ্ট হয়ে গেছে।

এছাড়াও সেখানে মাদক সেবীদের প্রতিনিয়ত বসে মাদক সেবনের আখড়া।
ভাস্কর্যটির চারিদিকে নিরাপত্তা সীমানা প্রাচীর থাকায় সেখানে
নিরাপদে বসে মাদক সেবনে সহজ হয় মাদক সেবীদের জন্য। মূল ভাস্কর্যের
পিছন পাদদেশে বসে চলে গাঁজা সেবনের জমজমাট আসর। মূল ফটকে তালা,
সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা কম হওয়ায় নিরিবিলি এলাকা ও ভিতরে প্রবেশে
বাধা বিপত্তি না থাকায় বর্তমানে মাদক সেবনের জন্য এটি একটি
নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিছির উদ্দিনের কাছে জানতে
চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন দিবসে আমরা শুধুমাত্র পুষ্পস্তবক দেয়।
পবিত্রতা বা রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব কমিটির।
ভাস্কর্য রক্ষনাবেক্ষ কমিটির সভাপতি সুজিত টুডুর নিকট জানতে চাইলে
তিনি বলেন, আমি মৌাখিক ভাবে অনেকবার মূল উদ্যোক্তা আমিনুল ইসলাম
বাবুল ভায়ের নিকট বলেছি। উনি ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
তবে এলাকাবাসীর দাবী মুক্তিযুদ্ধের আদিবাসী শহীদ পরিবারের স্মৃতি স্বরপ
দেশের প্রথম আদিবাসী ভাস্কর্যটির পবিত্রতা ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য উদ্যোক্তা সহ
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © banglarprotidin.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
themebazarbanglaro4451