রাজধানীর হাতিরঝিলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন ভাঙাতে আর সময় চাওয়া হবে না এই মর্মে মুচলেকা দিতে বলেছেন আপিল বিভাগ। তার পরই এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে।
এমন আদেশ দিয়ে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মামলাটি নট টুডে (আজকে নয়) রাখেন।
আদালতে বিজিএমইএ’র পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মঈনুল ইসলাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ এপ্রিল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের পূর্ব পাশে হাতিরঝিলে বিজিএমইএ’র ১৬ তলা ভবনটি ভবনটি ভাঙতে সাত মাস সময় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, এটাই শেষ সুযোগ। আর সময় দেওয়া হবে না। কিন্তু গত ৫ মার্চ ভবনটি ভাঙতে আরো এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গত বছরের ৫ মার্চ আপিল বিভাগ এই ভবন অবিলম্বে ভেঙে ফেলতে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে (রিভিউ) করা আবেদন খারিজ করে দেন। তখন ভবন ভাঙতে কত দিন সময় লাগবে, তা জানিয়ে আবেদন করতে বলেন। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ ভবন সরাতে তিন বছর সময় চেয়ে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ মার্চ আপিল বিভাগ বিজিএমইএ’র আবেদন নিষ্পত্তি করে ছয় মাস সময় দেন।
২০১৬ সালের ২ জুন বিজিএমইএর করা লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে যায় আপিল বিভাগে। ওই বছরের ৮ নভেম্বর বিজিএমইএ’র ১৬ তলা ভবনটি অবিলম্বে সংগঠনের নিজ খরচায় ভেঙে ফেলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে ৮ ডিসেম্বর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ।
এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবন ভাঙার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে বিজিএমইএ ভবন একটি ক্যানসারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। তবে এই লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘বেগুনবাড়ি খাল’ ও ‘হাতিরঝিল’ জলাভূমিতে অবস্থিত ‘বিজিএমইএ কমপ্লেক্স’ নামের ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ ক্ষেত্রে ভবন ভাঙার খরচ আবেদনকারীর (বিজিএমইএ) কাছ থেকে আদায় করবে তারা।