রামগঞ্জ প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় গত ৪ দিনে ৩টি খুঁনের ঘটনা ঘটে।
থানা পুলিশ চাঞ্চল্যকর ৪ দিনে ৩ খুঁনের ঘটনায় কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
উৎঘটন করতে পারেনি কোন মামলার রহস্য। পুলিশের রহস্যজন ভ’মিকায় দিন দিনেই ক্ষোভ
জানান উপজেলার জনসাধারণ।
খুঁনিদের গ্রেপ্তার দাবীতে উপজেলা প্রাথমিক,মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিক,মাদ্রাসা,সহ
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন,ঢাকাস্থ রামগঞ্জ উপজেলা বাসি ঢাকা জাতীয়
প্রেসক্লাব,চট্রগ্রাম প্রেসক্লাবও মানববন্ধন কর্মসূচী করেন।
ভাইরাল হচ্ছে ফেসবুক ও পেইজ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্য মিডিয়াসহ অনলাইন পত্রিকায় ৩
খুঁনের রহস্য নিয়ে সংবাদ ফলাও হচ্ছে। ভুক্তভোগীরাসহ স্থানীয়দের মাঝে প্রশাসনের
বিরুদ্বে চাপা ক্ষোভ করেন।
সূত্রে জানান গত ২৩শে মার্চ শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময়ে উপজেলার পশ্চিম
নোয়াগাঁও কালামেস্ত্রীর বাড়ির প্রবাসি এরশাদ হোসেনের মেয়ে ও নোয়াগাঁও নুরানী
মাদ্রাসার তৃতীয় জামাতের ছাত্রী নুশরাত জাহান নিশু (৮) বাড়ির সামনের আইসক্রীম
কিনতে আসলে নিখোঁজ হয়।
স্বজনেরা বহু অনুসন্ধান করে না পেয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করেন। মাইকিং,ছবিসহ
ফেসবুকসহ প্রিন্ট মিডিয়া সহ অনলাইনে ৫লাখ টাকা সন্ধানদাতাকে পুরুস্কার দিবে
বলে ঘোষনাও করেন।
নিখোঁজের ৩দিন পর গত ২৬শে মার্চ সোমবার দুপুরে উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউপির
ভূম্ম্যপাড়া গ্রামের ঠাকুর বাড়ির ব্রিজের নিছে বস্তাবর্তী নুশরাতের গলিত লাশ উদ্বার
করেন। প্রাথমিক সূরত হালে দুর্বৃত্তরা নুশরাতকে ধর্ষণ পর শ্বাসরোধে হত্যা করে দেহের
হাঁড় ভেঙ্গে একটি ফুটবলের ন্যায় ছোট বস্তার ব্যাগ মুছড়ে পানিতে ফেলে দেয়।
গত শুক্রবার ভোর রাতে উপজেলার আকারতমা কমাররোর্ড পাশ্বে প্রবাসি দুলাল হোসেনের
স্ত্রী মর্জিনা আক্তার (৪০)কে দুর্বৃত্তরা তার বসত বাড়িতে প্রবেশ করে ধর্ষণ করে
শ্বাসরোধে হত্যা করেন। শনিবার পুলিশ লাশ উদ্বার করে জেলা মর্গে প্রেরণ করেন।
দ্দক্রবার রাতে মর্জিনা ও তার স্কুল পড়–য়া ছেলেকে নিয়ে বসত বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত
সাড়ে ১২টায় ওই গৃহবধূ বসত বাড়িতে দালানের দরজা ও জানালা দুর্বৃত্তরা থাপ্পড়াতে
থাকে।
এ সময়ে গৃহবধূ মর্জিনা আক্তার পাশ্ববর্তী পিত্রালয় বসত বাড়ি থেকে বাবা মনতাজ
মিয়া,মা নুরজাহান বেগমসহ স্বজনদেরকে তার বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানার ঘটনা জানান।
রাত ১টায় মর্জিনার বাবা,মা ও তাদের বাড়ির,বাড়ির সামনের কমার রোর্ডে ব্যবসায়ীরা
মর্জিনার বাড়িতে গিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে রাত দেড়টায় মর্জিনার বাড়ি থেকে
সবাই চলে আসেন।
মর্জিনা বাড়িতে তার স্কুল পড়–য়া ছেলেকে নিয়ে তিনি ফের নিজবসত বাড়ি (দালানে)
ঘুমিয়ে পড়েন। মর্জিনার দালানের পাশ্বেবর্তী দালানে তার ছোট ঝাঁ মরিয়ম আক্তার
তিনিও একা বসবাস করতেন।
মজিনার ডাকে সাড়া দিয়ে ফের আসার সময়ে মর্জিনার হাতের মোবাইলটি তার মা
নুরজাহান নিয়ে আসেন। রোববার ভোরবেলায় ফজর নামাজের সময় মর্জিনার দালানের
জানালায় মর্জিনার লাশ দেখতে পেয়ে ছোট ঝাঁ মরিয়ম সবাইকে মোবাইলে জানান।
মর্জিনার লাশ হয়ে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকলেও ঝাঁ রাতের আধারে শাহরাস্তির কেশরাঙ্গা
গ্রামে তার বাপের বাড়িতে পালিয়ে যায়।
মর্জিনার মা নুরজাহান বেগম ভোরবেলায় মর্জিনার বাড়িতে অবস্থান করে ঘটনাটি
ধাপা-চাপার রহস্য জানতে চায় গ্রামবাসি।
কি কারণে তিনি রাত দুইটায় মর্জিনা বাড়ি ফেরার সময় মর্জিনার হাতে ব্যবহৃত
মোবাইলটি নিয়ে আসেন। অথবা মর্জিনার বাড়িতে তার সাথে ঘুমাতে পারতেন
নতুবা তাকে সাথে নিয়ে যেতে পারতেন।
পুলিশের প্রাথকিম তদন্তে সহ স্থানীয়দের মতে, দুর্বৃত্তরা মর্জিনাকে গভীররাতে ধর্ষণ
করে দেহের পোষাক খুলে দালানে এশটি কক্ষে ফেলে মর্জিনার ঘরে রক্ষিত নতুন একটি
পোশাক নিহত মর্জিনাকে পরিয়ে তার বুকে নতুন একটি ওড়না মুখে পাউডার ও
লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে ঘরের মাঝখানে হাটুঁ ঘেষে ফ্লোরে বসিয়ে উপরে মাথাটি
সিলিং ফ্যানের একটি হাতলে জরাজীর্ণ একটি ওড়না পেছিয়ে আলতো ভাবে বাঁধ দিয়ে
যাতে মুর্জিনাকে দেখে মানুষ ভয় পায় এমন দৃশ্য অবস্থায় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
মর্জিনার পিতা-মাতাসহ স্বজনেরা জানান মর্জিনা হত্যার মামলা করতে গেলে পুলিশ
তাদেরকে বিভিন্ন অজুহাতে মামলা থেকে বারণ করেন।
গত মঙ্গলবার উপজেলার সাউধেরখিল সুজা ভ’ইয়া বাড়ির হাবীব উল্যাহ ভ’ইয়ার ছেলেও
আ’লীগ নেতা মহসিন ভ’ইয়া (৫০)কে সম্পত্তি বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন
খাদ্যদ্রব্য দুধের সাথে পটাশ বিষ মিশ্রিত করেন। ওই দুধ রাত দশটায় রাতের খাবার খেয়ে
দুধপ্রাণ করলে তিনি তাৎক্ষনিক বুকে ব্যাথা হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। স্বজনেরা তাকে
উদ্বার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্য্র ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষনা
করেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্বার করে জেলা মর্গে প্রেরণ করেন। প্রাথমিক ময়না
তদন্তে পুলিশ জানান সেবন করা দুধের সাথে বিষ মিশ্রিত রয়েছে।
নিহত মহসিনের স্ত্রী শিরিনা বেগম,চাচা জানান তাদের বাড়ির কুতুব উদ্দিন ও মাইন
উদ্দিন সাথে মহসিনের বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে দেওয়ানী ও ফোজদারী মামলা রয়েছে।
মহসিনের স্ত্রী রান্না ঘরে দুধ রেখে প্রকৃতি সাড়া দিতে গিয়ে মামলার আসামীরা
দুধে বিষ প্রয়োগ করেন।
তারা কান্না জড়িত বলেন কুতুবউদ্দিন ও মাইনউদ্দিন গং গত বছর খাদ্যদ্রব্য সাথে বিষ
প্রয়োগ করেন । পরেই ওই খাবার খেয়ে মহসিনের পরিবারের ৫জন উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্য্র
ভর্তি করেন। মহসিন নিহতের আগের দিনেরও প্রতিপক্ষ ভাড়াটে দুর্বৃত্ত দিয়ে মামলা তুলে
নেওয়ার জন্য মহসিনকে প্রাণনাসের হুমকিও প্রদান করেন।
থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি তোতা মিয়া জানান প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত
সাপেক্ষে অপরাধীকে আটকের চেষ্টা চলছে।